আযানে আলীর(আঃ) নামে সাক্ষ্য দেয়া

আযানে আলীর(আঃ) নামে সাক্ষ্য দেয়া ডঃ তিজানী সামাভীঃ কেন শিয়ারা আযান ও ইক্কামতে সাক্ষ্য দেয় যে, আলী(আঃ) আল্লাহর অলী?
আয়াতুল্লাহ বাকের সাদর(রঃ): আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী(আঃ) হচ্ছেন আল্লাহর একজন বান্দা,যাকে আল্লাহ অন্য সকলের মধ্য থেকে নির্বাচিত করেছেন,সম্মান ও মর্যাদা দান করেছেন,যাতে তিনি নবুওয়াতের পর ইমামতের গুরু দায়িত্বকে নিজের ঘাড়ে তুলে নিতে পারেন।

আর তিনি হচ্ছেন রাসুলের(সাঃ) ওয়াসী ও স্থলাভিষিক্ত। যেহেতু সকল নবীরই একজন প্রতিনিধি ছিলেন,তেমনই আলী(আঃ) হচ্ছেন রাসুলের(সাঃ) প্রতিনিধি। আর আমরা তাকে অন্যান্য সকল সাহাবির চেয়ে উচ্চে স্থান দিয়ে থাকি।কেননা আল্লাহ ও তাঁর রাসুল(সাঃ) তাকে মর্যাদা দিয়েছেন। এই বিষয়টি কোরান ও হাদিসের আলোকে বিভিন্ন আক্কলী(বিবেক সম্মত) ও নাকলী(বর্ননাকৃত) দলিল আমাদের হাতে আছে। আর এই দলিলসমুহে কোন প্রকার সন্দেহের অবকাশ নাই। কেননা তা শুধু আমাদের পক্ষ থেকেই শুধু মুতাওয়াতির (বহুল প্রচারিত) নয় বরং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের কাছেও তা মুতাওয়াতির বলে বিবেচিত।
এই বিষয়ের উপর আমাদের আলেমগন প্রচুর পরিমানে বই লিখেছেন। আর যেহেতু খিলাফতে বনি উমাইয়া এই নিগুঢ় ও অটূট সত্যকে ধ্বংশ করার লক্ষ্যে আলী(আঃ) ও তাঁর সন্তানদের সাথে যুদ্ব করেছিল ,তাদেরকে হত্যা করেছিল; মিম্বরের উপরে তাঁর বিরুদ্বে লা’নত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল এবং মুসলমানদেরকে তা করার জন্য উপর্যপুরী চাপ সৃষ্টি করেছিল। তাই শিয়ারা ও তাঁর অনুসারীগন আযানে আযানে সাক্ষ্য দিয়ে থাকে যে, তিনি হচ্ছেন আল্লাহর একজন অলি। আর এটা অত্যাচারী বনি উমাইয়াদের বিরুদ্বে শিয়াদের এক ধরনের যুদ্ব,যাতে করে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের(সাঃ) এবং মু’মিনগনের সম্মানকে প্রতিষ্টা করতে পারেন। আর তা যেন একটি ঐতিহাসিক বিষয় হয়ে থাকে এবং আগামী প্রজন্ম আলীর(আঃ) প্রকৃত অধিকারের ব্যাপারে ও তাঁর শত্রুদের গোমরাহীর পথ সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
আর এই কারনেই আমাদের ফকিহগন ( যারা ফীকাহ শাস্ত্রে দক্ষ) এই প্রক্রিয়ায় অগ্রসর হয়ে আলীর (আঃ) বেলায়েতকে আযান ও ইকামতে সংযোজন করেছিলেন। যদিও তা আযান ও ইকামতে বলাটা হচ্ছে মুস্তাহাব, যা আযান ও ইকামতের অংশ নয়। সুতরাং যখনই কেউ আযান বা ইকামত দেয় সে যদি এই মর্মে নিয়ত করে সাক্ষ্য দেয় যে, এটা আযান বা ইকামতের একটি অংশ তবে তাঁর আযান ও ইকামত বাতিল বলে গন্য হবে ( ইকতিবাস,অবশেষে সত্য পেলাম বইয়ের মুল আরবী থেকে,পাতা ৮৮-৮৯)।
( ডঃ তিজানী সামাভী সুন্নী মাযহাবের অনুসারী ছিলেন তাই গবেষনার জন্য তিনি তিউনিশিয়া থেকে ইরাকের নাজাফে আশরাফে গিয়েছিলেন।আর সেখানে তাঁর বন্ধ্বুর মাধ্যমে শহিদ আয়াতুল্লাহ বাকের সাদরের(রঃ) সাথে পরিচিত হন।
শহিদ আয়াতুল্লাহ বাকের সাদরের(রঃ) ঃ শহিদ আয়াতুল্লাহ আল উযমা বাকের সাদর(রঃ) ১৩৫৩ হিজরীতে ইরাকের কাযেমাইনে জন্মগ্রহন করেন।যুবক বয়সেই তিনি ইজতিহাদের যোগ্যতায় উন্নিত হন।তিনি বিভিন্ন বিষয়ের উপর য্বেমন ফিকাহ শাস্ত্র, উছুল শাস্ত্র,ইসলামী যুক্তিবিদ্যা,দর্শন ও আরো অন্যান্য বিষয়ের উপর প্রায় ২৪টি বই লিখেছেন।তিনি ইরাকের অত্যাচারী শাসক কমরেড সাদ্দাম হোসেনের বিরুধ্বে কলমের মাধ্যমে জিহাদ করেন এবং অবশেষে কুক্ষাত সাদ্দাম ৪৭ বছর বয়সে তাঁকে ও তাঁর সম্মানিত বোন বিনতুল হুদাকে ফাসীতে ঝুলিয়ে শহিদ করেন।আসুন আমরা সবাই এই শহিদদের জন্য দোয়া ও শাফায়াত কামনা করি। এই ২জনকে শহিদ করার পর কুক্ষাত সাদ্দাম ইরাকের সমস্ত সম্মানিত আলেমদের উদ্দেশ্যে ঘোষনা করে যে, কোথায় তোমাদের আল্লাহ,আল্লাহ নাই,তোমাদের আল্লাহর জানাজা হয়ে গেছে(নাউজুবিল্লাহ)।

মুহাম্মাদ মুহাম্মাদী ইশ্তিহারদী
অনুবাদঃ মীর আশরাফুল আলম ও সামিউল হক