আগস্ট 7 2023
আহজাব যুদ্ধ জয়ের নায়ক আলীর সেই ‘আঘাত’ সম্পর্কে মহানবী (সা.)
১৭ শাওয়াল ঐতিহাসিক আহজাব বা খন্দক যুদ্ধ-জয়ের বার্ষিকী। ১৪৩৯ চন্দ্র-বছর আগে পঞ্চম হিজরির এই দিনে ঐতিহাসিক এ যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিল মুসলমানরা। এ যুদ্ধেরও প্রধান বীর ছিলেন মুমিনদের নেতা তথা আমিরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আ.)।
আলী (আ.) এ যুদ্ধে কাফির শিবিরের প্রধান দুর্ধর্ষ যোদ্ধা আমর ইবনে আবদে উদকে বিশ্বনবী (সা.)’র উপহার দেয়া অমর তরবারি জুলফিকারের অব্যর্থ আঘাতে জাহান্নামে পাঠিয়েছিলেন। মূলত হযরত আলীর এই আঘাতের কারণেই এই মহাযুদ্ধে বিজয়ী হয় মুসলমানরা। এ মহাযুদ্ধ জয় ইসলামের জন্য ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এর আগে আর কোনো যুদ্ধে আরব বিশ্বের সবগুলো কাফির ও ইহুদি গোত্র ইসলামের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধে নামেনি। বিশ্বনবী (সা.)-কে হত্যা করাসহ মুসলমানদের নাম-নিশানা পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন করা ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে এই মহাযুদ্ধ আয়োজনের লক্ষ্য।
ইসলাম-বিদ্বেষী কয়েকজন ইহুদি ছিল এই যুদ্ধের মূল সংগঠক ও উদ্যোক্তা। মক্কার কাফির নেতাদের তারাই উত্তেজিত করে ও সবগুলো ইহুদি গোত্রের সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস দিয়ে তারা মূর্তিপূজারি কাফির গোত্রগুলোকে এ যুদ্ধে নামায়। দশ হাজার সেনার শক্তিশালী বাহিনী নিয়ে কাফিররা মদীনা অবরোধ করে।
অন্যদিকে বিশ্বনবী(সা.)’র নেতৃত্বে তিন হাজার মুসলমান প্রতিরক্ষায় নিয়োজিত হন। বিখ্যাত সাহাবি হযরত সালমান ফার্সি (আ.)’র পরামর্শে মদীনার অরক্ষিত অথচ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোকে হামলা থেকে রক্ষার জন্য প্রায় সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ (প্রায় ৫ মিটার গভীর ও ৫ মিটার চওড়া) এক গভীর পরিখা বা গর্ত খনন করা হয় যাতে শত্রুর দক্ষ অশ্বারোহী সেনাও এই পরিখা অতিক্রম করতে না পারে। এই জন্য এই যুদ্ধকে খন্দকেরও যুদ্ধও বলা হয়।
এই পরিখা খনন ও তার আশপাশে মুসলিম সেনাদের কড়া প্রহরার ফলে বহু দিন ধরে অবরোধ চালিয়ে যেতে হয়েছিল সম্মিলিত কাফির বাহিনীকে। তীব্র শীত শুরু হওয়ায় এবং খাদ্য-দ্রব্য ও রসদ ফুরিয়ে আসায় পরিস্থিতি ক্রমেই কাফিরদের জন্য হতাশাজনক হয়ে পড়ছিল। তাই কাফির নেতারা যে কোনোভাবে পরিখা অতিক্রম করে মুসলমানদের ওপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। আর মদীনার ভেতর থেকে ইহুদি গোত্র বনি কুরাইযা কাফিরদের জন্য পথ খুলে দেবে ও শহরের ভেতরে আকস্মিক লুটপাটের মাধ্যমে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তারাও আগ্রাসন শুরু করবে বলে গোপনে ষড়যন্ত্র পাকানো হয়।
কাফির শিবিরের প্রধান দুর্ধর্ষ যোদ্ধা আমর ইবনে আবদে উদ ছাড়াও ইকরামাহ্ ইবনে আবী জাহল, হুবাইরা ইবনে ওয়াহাব, নওফেল ইবনে আবদুল্লাহ্ এবং যিরার ইবনে খাত্তাব নামের পাঁচ ভয়ানক কাফির কমান্ডার যুদ্ধের পোশাক পরে দর্পভরে বনী কিনানার সৈন্যদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল : “তোমরা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে যাও। আজ তোমরা বুঝতে পারবে, কারা আরব বাহিনীর প্রকৃত বীর যোদ্ধা।” এরপর অশ্ব চালনা করে পরিখার যে অংশটির প্রস্থ কম ছিল, সেখান দিয়ে ঘোড়াসহ লাফ দিয়ে এ পাঁচ অতি শক্তিশালী যোদ্ধা সেখানে প্রহরারত মুসলিম তীরন্দাজ সৈন্যদের নাগালের বাইরে চলে যায়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পরিখা পার হবার স্থান ঘেরাও করে ফেলা হয় এবং অন্যদের তা অতিক্রম করার ক্ষেত্রে বাধা দান করা হয়।
মল্ল (দ্বৈত) যুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে আসা অত্যন্ত শক্তিশালী এ পাঁচ যোদ্ধা পরিখা ও সালা পাহাড়ের (ইসলামী সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় শিবির) মাঝখানে এসে দাঁড়াল। তারা সেখানে অহংকারবশত নিজেদের অশ্বগুলোর সাথে ক্রীড়ায় লিপ্ত হলো এবং ইশারায় তাদের প্রতিপক্ষকে মল্লযুদ্ধের আহ্বান জানাতে লাগল।
এ পাঁচ জনের মধ্যে সাহস ও কৌশলের দিক থেকে বেশি বিখ্যাত দুর্ধর্ষ যোদ্ধাটি মুসলমানদের সামনে এসে দ্বৈত যুদ্ধে লিপ্ত হবার আহ্বান জানাল। সে মুহূর্তের পর মুহূর্ত ধরে নিজের কণ্ঠ উচ্চকিত করতে লাগল এবং মাতলামিপূর্ণ হুঙ্কার-ধ্বনি দিয়ে বলতে লাগল : هل من مبارز؟ “তোমাদের মধ্যে কি কোন যোদ্ধা আছে?” তার এ আস্ফালন সমগ্র যুদ্ধক্ষেত্র জুড়ে প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল এবং মুসলিম সৈন্যদের দেহে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। মুসলমানদের নীরবতা তার স্পর্ধা আরো বাড়িয়ে দিয়েছিল। সে (ব্যঙ্গচ্ছলে) বলছিল : “বেহেশতের দাবীদাররা কোথায়? তোমরা মুসলমানরা কি বলো না যে, তোমাদের নিহত ব্যক্তিরা বেহেশতে এবং আমাদের নিহতরা জাহান্নামে যাবে? তোমাদের মধ্য থেকে কি একজনও আমাকে দোযখে পাঠানোর জন্য বা আমার পক্ষ থেকে তাকে বেহেশতে পাঠিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়?”আর সে তার এ কথাগুলো বীরত্ব-গাঁথায় এভাবে বলছিল :
و لقد بححت من النّداء بجمعکم هل من مبارز“উচ্চস্বরে কথা বলার জন্য এবং মল্লযোদ্ধাকে আহ্বান জানাতে জানাতে আমার গলা বসে গেছে।”
ইসলামী বাহিনীর সমাবেশ কেন্দ্রে আমরের আস্ফালন ও দম্ভোক্তির বিপরীতে শুনশান নীরবতা বিরাজ করছিল। তখন মহানবী (সা.) বলছিলেন, মুসলমানদের মধ্য থেকে একজন বের হয়ে এ লোকের অনিষ্ট থেকে মুসলমানদের রেহাই দিক। কিন্তু একমাত্র হযরত আলী ইবনে আবী তালিব ছাড়া আর কেউই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হলেন না।
ওয়াকিদী লিখেছেন : “যখন আমর মুসলমানদের মধ্য থেকে তার সমকক্ষ যোদ্ধাকে এসে তার সাথে মল্লযুদ্ধের আহ্বান জানাচ্ছিল, তখন সকল মুসলিম যোদ্ধার মাঝে এতটা নীরবতা বিরাজ করতে লাগল যে, এমন প্রতীয়মান হচ্ছিল, তাঁদের মাথার উপর যেন পাখিও বসে থাকতে পারবে।”
আহজাব রণাঙ্গনের ম্যাপ
অগত্যা এ সমস্যার সমাধান অবশ্যই হযরত আলী ইবনে আবী তালিবের (আ.) হাতেই হতে হবে। মহানবী (সা.) তাঁর অপরাজেয় ও অমর দ্বিধারী তরবারি (জুলফিকার) হযরত আলী (আ.)-এর হাতে তুলে দিলেন এবং তাঁর বিশেষ পাগড়ী আলী (আ.)-এর মাথায় বেঁধে দিয়ে তাঁর জন্য দুআ করলেন : “হে আল্লাহ্! আলীকে সব ধরনের অনিষ্ট থেকে রক্ষা করুন। হে প্রভু! বদরের যুদ্ধে উবাইদাহ্ ইবনে হারেসা এবং উহুদের যুদ্ধে শেরে খোদা (আল্লাহর ব্যাঘ্র) হামযাকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। হে প্রভু! আলীকে শত্রুর আঘাত ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করুন।” এরপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পাঠ করলেন :
ربّ لا تذرنِى فردا و أنت خیر الوارثین“হে প্রভু! আমাকে একাকী করবেন না; আর আপনিই সর্বশ্রেষ্ঠ উত্তরাধিকারী।” (সূরা আম্বিয়া : ৮৯)
হযরত আলী (আ.) বিলম্ব পুষিয়ে দেয়ার জন্য যত দ্রুত সম্ভব রওয়ানা হয়ে গেলেন। এ সময় মহানবী তাঁর সম্পর্কে ঐতিহাসিক এ উক্তি করেছিলেন : برز الإیمان کلّه إلى الشّرک کلّه
“গোটা র্শিকের মোকাবেলা করতে গোটা ঈমান (রণক্ষেত্রে) আবির্ভূত হয়েছে।”
হযরত আলী (আ.) তাঁর প্রতিপক্ষের বীরত্ব-গাঁথার অনুরূপ গাঁথা রচনা করে বললেন :
لا تعجلن فقد أتاک مجیب صوتک غیر عاجز“তাড়াহুড়ো করো না। কারণ তোমার আহ্বানে সাড়াদানকারী তোমার কাছে এসেছে,যে অক্ষম (দুর্বল) নয়।”
হযরত আলী (আ.)-এর সমগ্র দেহ লৌহ নির্মিত ভারী বর্ম ও অস্ত্র-শস্ত্রে আচ্ছাদিত ছিল এবং কেবল তাঁর দুটি নুরানি চোখ শিরস্ত্রাণের ছিদ্রের মধ্য দিয়ে জ্বলজ্বল করছিল। আমর প্রতিপক্ষকে চিনতে চাচ্ছিল। তাই সে হযরত আলী (আ.)-কে বলল : “তুমি কে?” স্পষ্টবাদিতার জন্য বিখ্যাত হযরত আলী বললেন : “আলী ইবনে আবী তালিব।” আমর বলল : “আমি তোমার রক্ত ঝরাব না। কারণ তোমার পিতা ছিলেন আমার পুরনো বন্ধু। আমি তোমার চাচাত ভাইয়ের (বিশ্বনবী- সা.)’র ব্যাপারে ভেবে অবাক হচ্ছি, সে তোমাকে কোন্ ভরসায় আমার সাথে লড়ার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়েছে? আমি তোমাকে না জীবিত, না মৃত এমন অবস্থার মধ্যে বর্শায় গেঁথে আকাশ ও পৃথিবীর মাঝে (শূন্যে) ঝুলিয়ে রাখতে পারি।”
ইবনে আবীল হাদীদ বলেন : “আমার ইতিহাস বিষয়ক শিক্ষক (আবুল খাইর) ইতিহাসের এ অধ্যায় বর্ণনা ও ব্যাখ্যা করতে গেলেই বলতেন : আমর আসলে আলীর সাথে দ্বৈত যুদ্ধে লিপ্ত হবার ব্যাপারে ভয় পাচ্ছিল। কারণ সে বদর ও উহুদ যুদ্ধে উপস্থিত ছিল এবং হযরত আলীর বীরত্ব সে সচক্ষে দেখেছে। এ কারণেই সে আলীকে যুদ্ধ থেকে বিরত রাখতে চাচ্ছিল।”
হযরত আলী (আ.) বললেন : “তুমি আমার মৃত্যু নিয়ে মাথা ঘামিও না। আমি উভয় অবস্থায় (আমি নিহত হই বা তোমাকে হত্যা করি) সৌভাগ্যবান এবং আমার বাসস্থান বেহেশত। তবে সকল অবস্থায় দুযখ তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।” আমর মুচকি হেসে বলল : “আলী! এ ধরনের বণ্টন ন্যায়ভিত্তিক নয় যে, বেহেশত ও দোযখ উভয়ই তোমার সম্পত্তি হবে।”
ঐ সময় আলী (আ.) আমর ইবনে আবদে উদকে ঐ প্রতিজ্ঞার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন, যা একদিন কাবার পর্দা ছুঁয়ে নিজ প্রভুর (মহান আল্লাহর) সাথে করেছিল। আর তা ছিল, যুদ্ধের ময়দানে যদি কোন বীর তার প্রতিপক্ষকে তিনটি প্রস্তাব দেয়, তা হলে সেগুলোর যে কোন একটি তাকে গ্রহণ করতে হবে। এ কারণেই হযরত আলী (আ.) প্রস্তাব দিলেন, প্রথমে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করবে। কিন্তু সে বলল : “আলী! এটা বাদ দাও। কারণ তা সম্ভব নয়।” আলী (আ.) তাকে বললেন : “যুদ্ধ থেকে ক্ষান্ত হও এবং মুহাম্মদ (সা.)-কে তাঁর নিজ অবস্থার ওপর ছেড়ে দাও এবং যুদ্ধক্ষেত্র থেকে দূরে চলে যাও।” সে বলল : “এ প্রস্তাব আমার জন্য লজ্জাজনক। কারণ আগামীকালই আরবের কবিরা আমার ব্যাপারে ব্যঙ্গ করবে এবং তারা ভাববে, আমি ভয় পেয়ে এ কাজ করেছি।” তখন আলী (আ.) বললেন : “এখন যখন তোমার প্রতিপক্ষ যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে, তখন তুমিও তোমার ঘোড়ার পিঠ থেকে নেমে এসো যাতে আমরা মল্লযুদ্ধে লিপ্ত হই।” সে বলল: “আলী! আসলে এটি একটি তুচ্ছ প্রস্তাব মাত্র। আমি কখনোই ভাবি নি যে, কোনো আরব আমার কাছে এমন প্রস্তাব করতে পারে!”
দুই দুর্ধর্ষ যোদ্ধার লড়াই শুরু
দুই দুর্ধর্ষ যোদ্ধার মধ্যে তীব্র মল্লযুদ্ধ শুরু হলো এবং তাদের দু’জনের চারপাশ ধূলো-বালিতে ছেয়ে গেল। প্রত্যক্ষদর্শীরা তাদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারছিল না। ঢাল ও বর্মের উপর তরবারির আঘাতের শব্দ ছাড়া আর কিছুই তাদের কানে আসছিল না। বেশ কয়েকটা আঘাত ও পাল্টা আঘাতের পর আমর তার তরবারি দিয়ে হযরত আলীর মাথায় আঘাত হানলে আলী (আ.) তা তাঁর ঢাল দিয়ে প্রতিহত করলেন। এ সত্ত্বেও তাঁর মাথা ফেটে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি এ সুযোগে তরবারি দিয়ে প্রতিপক্ষের পায়ে তীব্র আঘাত হানলেন অথবা তিনি তার দু’পা বা একটি পা কেটে ফেললেন। ফলে আমর মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। কোনো কোনো বর্ণনায় এসেছে, মাটিতে ধরাশায়ী হওয়ার পর আমর আলী (আ.)-এর দিকে থুথু নিক্ষেপ করে। এ অবস্থায় আলী (আ.) ক্রুদ্ধ হন, কিন্তু আমরকে ছেড়ে দেন। তাকে ছেড়ে দিলে সে উঠে দাঁড়ায় এবং আবারও যুদ্ধ করে।দ্বিতীয় যুদ্ধে আলী (আ.) তাকে জাহান্নামে পাঠান। আলী (আ.) এর মাধ্যমে ব্যক্তিগত ক্রোধের উর্ধ্বে উঠে আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরিপূর্ণ জিহাদের সাওয়াব নেয়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
ধূলো-বালির মধ্য থেকে আলী (আ.)-এর বিজয়ী হবার নিদর্শন দেখে তাকবীর ধ্বনি উত্থিত হলো। যে সব কথিত আরব বীর আমরের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল, আমরের ধরাশায়ী হবার দৃশ্য তাদের অন্তরে এতটা ভয় সঞ্চার করল যে, তারা নিজেদের অজান্তেই লাগাম ধরে নিজেদের ঘোড়াগুলোকে পরিখার দিকে চালনা করল এবং একমাত্র নওফেল ছাড়া তাদের সবাই তাদের নিজেদের সেনাশিবিরে ফিরে গেল। নওফেলের অশ্ব পরিখার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল এবং সে নিজেও মাটিতে পড়ে গিয়ে তীব্র আঘাত পেয়েছিল। পরিখায় প্রহরারত সৈন্যরা তার দিকে পাথর ছুঁড়তে থাকলে সে চিৎকার করে বলতে লাগল : “এভাবে হত্যা করা মহানুভবতার পরিপন্থী। আমার সাথে মল্লযুদ্ধের জন্য একজন পরিখার ভেতরে নেমে এসো।” হযরত আলী (আ.) পরিখার ভেতরে নেমে তাকে হত্যা করলেন।
মুশরিক বাহিনীর সমগ্র অস্তিত্ব জুড়ে প্রচণ্ড ভীতি সৃষ্টি হলো। আর আবূ সুফিয়ানই সবচেয়ে বেশি ঘাবড়ে গিয়েছিল। সে ভাবছিল, মুসলমানরা হামযার হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য নওফেলের লাশ বিকৃত করতে পারে। তাই সে নওফেলের লাশ দশ হাজার দীনারে কেনার জন্য এক ব্যক্তিকে পাঠালে মহানবী (সা.) বলেছিলেন : “লাশটা দিয়ে দাও। কারণ ইসলাম ধর্মে মৃতদেহের বিনিময়ে অর্থ নেয়া হারাম করা হয়েছে।”
হযরত আলী (আ.)-এর তরবারির এ আঘাতের মূল্য
বাহ্যত হযরত আলী (আ.) একজন ভয়ানক শক্তিশালী যোদ্ধাকে বধ করেছিলেন। তবে আসলেই তিনি ঐ সব ব্যক্তির মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করেছিলেন, আমরের গগন বিদারী হুঙ্কার-ধ্বনি শুনে যাদের দেহে কম্পন শুরু হয়ে গিয়েছিল। ঠিক তেমনি দশ হাজার সৈন্যের যে বিশাল বাহিনী নবগঠিত ইসলামী হুকুমত ধ্বংস করার জন্য কোমর বেঁধে প্রস্তুত হয়ে এসেছিল, তিনি তাদেরকেও আতঙ্কিত করে দিয়েছিলেন। আর যদি আমর জয়লাভ করত, তা হলে তখনই পুরোপুরি বোঝা যেত হযরত আলীর (আ.) এ আত্মত্যাগের মূল্য কত অপরিসীম ছিল!
হযরত আলী মহানবী (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হলে তিনি এভাবে আলী (আ.)-এর এ আঘাতের মূল্যায়ন করে বলেছিলেন : “আমার উম্মতের দুনিয়া ও আখিরাতের সমুদয় সৎকর্মের চেয়েও উত্তম হচ্ছে এ আত্মত্যাগের গুরুত্ব। কারণ কুফরের সবচেয়ে বড় দুর্ধর্ষ যোদ্ধার পরাজিত হবার কারণেই সব মুসলমান মর্যাদাবান এবং সব মুশরিক অপদস্থ হয়েছে।” (আল হাকিম সংকলিত আল মুস্তাদরাক, ৩০তম খণ্ড, পৃ. ৩০-৩২)
আলী (আ.)-এর মহানুভবতা
আমরের বর্ম অত্যন্ত দামী ও মূল্যবান হলেও হযরত আলী (আ.) মহানুভবতার কারণে তা ছুঁয়েও দেখেন নি। এমনকি দ্বিতীয় খলীফা এ জন্য আলী (আ.)-কে ভর্ৎসনা করেছিলেন যে, কেন তিনি আমরের দেহ থেকে বর্মটি খুলে আনেন নি। আমরের বোন ঘটনা জানতে পেরে বলেছিল : “আমি কখনই দুঃখ করব না যে, আমার ভাই নিহত হয়েছে। কারণ সে এক মহানুভব ব্যক্তির হাতেই নিহত হয়েছে। আর এর অন্যথা হলে আমার দেহে প্রাণ থাকা পর্যন্ত আমি অশ্রুপাত করতাম।”
আরবের সবচেয়ে শক্তিশালী বা দুর্ধর্ষতম যোদ্ধা আমর ইবনে আবদে উদ নিহত হবার পর সম্মিলিত আরব কাফির ও মুশরিক বাহিনী বাহিনীর খ্যাতিমান দুর্ধর্ষ যোদ্ধারা ছত্রভঙ্গ হয়ে পালিয়ে গিয়েছিল। ফলে ইসলামকে ধ্বংস করার এই মহাযুদ্ধ ব্যর্থ হয় এবং মুসলমানরাই বিজয় অর্জন করেন। এ ছাড়াও এই বিজয়ের অন্যতম কারণ ছিল এটা যে, গাতফান ও ফাযারাহ্ গোত্রের নেতারা বিশ্বনবী (সা.)’র সঙ্গে আপোষ-রফা করে। (সূত্র: ইতিহাস গ্রন্থ ” চিরভাস্বর মহানবী-সা., দ্বিতীয় খণ্ড)
azithromycin pills for sale
এপ্রিল 24, 2024 @ 12:56 পূর্বাহ্ন
buy azithromycin over the counter usa
zithromax 250 mg tablet
এপ্রিল 30, 2024 @ 9:24 অপরাহ্ন
buy zithromax 250mg
valtrex pills price
মে 1, 2024 @ 11:50 পূর্বাহ্ন
buy cheap valtrex
valtrex cream over the counter
মে 2, 2024 @ 1:54 অপরাহ্ন
valtrex prescription cost
슬롯
জুন 14, 2024 @ 7:02 পূর্বাহ্ন
মাশাআল্লাহ, আশা করি এমন ভালো পোষ্ট আরও পাবো।
슬롯
জুন 16, 2024 @ 7:02 অপরাহ্ন
톰 오브 매드니스
이로 인해 거래 비용이 극도로 높아지며 물론 피할 방법이 없습니다.
슬롯
জুন 18, 2024 @ 5:42 অপরাহ্ন
geinoutime.com
Fang Jifan은 눈을 가늘게 뜨고 그의 눈에는 탐욕스러운 표정도 있습니다.
슬롯
জুন 19, 2024 @ 6:23 পূর্বাহ্ন
geinoutime.com
그러나 Nuan Pavilion의 군주와 장관은 그가 죽든 말든 상관하지 않습니다.
슬롯
জুন 22, 2024 @ 9:00 পূর্বাহ্ন
더 트위티 하우스
Wang Tianbao는 이 말을 듣고 즉시 쓰러졌습니다.
슬롯
জুন 24, 2024 @ 7:45 পূর্বাহ্ন
슬롯 카지노
Fang Jifan은 싸움과 살인을 좋아하지 않고 평화를 사랑합니다.
슬롯
জুন 24, 2024 @ 8:39 অপরাহ্ন
온라인 슬롯
그의 머리는 약간 어지러웠고 이것은 오래 전에 잃어버린… 내가 부자가 된 느낌이었습니다.
슬롯
জুন 27, 2024 @ 8:12 পূর্বাহ্ন
무료 슬롯
그는 Shen Ao를 오랫동안 바라보다가 숨이 막혔습니다.
슬롯
জুন 29, 2024 @ 6:53 পূর্বাহ্ন
슬롯 무료
Fang Jifan의 문장, 거의 잊어 버렸습니다. 정말 천재적입니다.
슬롯
জুন 29, 2024 @ 8:04 অপরাহ্ন
레프리칸 리치스
이 소식이 알려지자 곧바로 큰 화제가 됐다.
슬롯
জুলাই 2, 2024 @ 9:19 পূর্বাহ্ন
북 오브 데드
“사랑하는 손자, 너무 예의 바르게 굴지 마세요. “Fang Jifan은 찻잔을 껴안았습니다. “왕자는 어디 있습니까?”
슬롯
জুলাই 4, 2024 @ 8:10 পূর্বাহ্ন
무료 슬롯 머신
이 모든 주식은 거래되고 거래 될 수 있습니다 …
슬롯
জুলাই 4, 2024 @ 9:03 অপরাহ্ন
온라인 슬롯 게임 추천
너무 현실적이야, 방금 그는 여전히 웃으며 사람들에게 엿 먹으라고 말하고 있었어?
슬롯
জুলাই 7, 2024 @ 9:10 পূর্বাহ্ন
토토 보증
왕세자는 순전궁의 총독이었고, 팡지범은 소복의 총독이었습니다.