ইমাম (আ.) এর অদৃশ্যকালীন সময়ে আমাদের দায়িত্ব

ইমাম (আ.) এর অদৃশ্যকালীন সময়ে আমাদের দায়িত্ব
ইমাম (আ.) এর অদৃশ্যকালীন সময়ে আমাদের দায়িত্ব

ইমাম (আ.) এর অদৃশ্যকালীন সময়ে আমাদের দায়িত্ব গুলোর মধ্য একটি দায়িত্ব হল ইমাম(আ.) এর আবির্ভাব এর জন্য দোয়া করা দোয়া মানুষের কলবকে জীবিত করে তুলে, দোয়া আশার আলোকে মানুষের মনে জ্বালিয়ে দেয়।
দোয়া হল সৃষ্টিকর্তার সাথে সম্পর্কের একটি মাধ্যম।দোয়ার মাধ্যমে বান্দা তার কলবের সাথে সৃষ্টিকর্তার সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা গবেষণায় পেয়েছেন যে দোয়া উদ্বেগ, উত্তেজনা এবং ভয় দূর করে, যা আমাদের অর্ধেকেরও বেশি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর এই দোয়া যদি নিজের যুগের ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য হয় এর একটি বিশেষত্ব থাকবে।
আয়েম্মাগণও (আ.) আমাদেরকে ইমাম মাহদী(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়ার করার নির্দেশ দিয়েছেন, তাই ইমামে জামানা(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করা হল আয়েম্মাগণের নির্দেশকে পালন করা। একমাত্র এই মহান ব্যাক্তিত্বের আবির্ভাবের মাধ্যমেই মানব জাতি সকল জুলম থেকে নাজাত পাবে। সুতরাং ইমামে মাহদী(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করা মানব জাতির নাজাতেরই একটি চাবি। যদি মানুষ প্রশংসনীয় পদ্ধতিতে, দলবদ্ধ হয়ে এবং মন থেকে দোয়া করতো অবস্যই ইমাম(আ.) এর আবির্ভাব আরো কাছে আসতো এবং তার অনেক বেশি প্রভাব পরতো। যাতে মানুষের ইমাম (আ.) আবির্ভাবের দোয়ার প্রতি ইচ্ছা ও চাহিদা বাড়ে ও মানুষ যাতে এই দোয়াকে পরিত্যাগ না করে তার জন্য মহান রব্বুল আলামিন প্রায় ৯০টা বৈশিষ্ট্য ও সুবিধা এই দোয়াতে রেখেছেন।

এমন কোন দোয়া খুজে বের করতে পারবেন না যেটা প্রতিনিয়ত পাঠ করলে এমন সুবিধা পাওয়া যবে শুধুমাত্র ইমাম (আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া ব্যাতিত। مکیال المکارم কিতাবের প্রথম খন্ডে ইমাম (আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়ার ৯০টি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে। যদি আমরা আবির্ভাবের জন্য সকল দোয়া গুলোর মধ্য একটি দোয়া প্রতিনিয়ত পাঠ করি আমরাও এই সকল বৈশিষ্ট্যর মধ্য অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো। (আল্লাহুম্মা আজ্জিল লি ওয়ালিয়াকাল ফারাজ) বলা ও দুরুদ এর সাথে আজ্জিল ফারাজাহুম বলা এইগুলোও ইমামে জামানা(আ.) এর আবির্ভাবের দোয়া করা।
আল্লাহমা আমিনি, আল গাদীর কিতাবের লেখক বলেছেন:- যে কেউ নিজের দুরুদকে আজ্জিল ফারাজাহুম এর সাথে বলবে, আমি তাকে কিতাবে আল গাদীর লেখার যে সাওয়াব পাবো তার মধ্য তাকেও শরীক করবো।
যারা ইমাম জামানের জন্য দোয়া করেন, তারা এই দোয়াটি ভুলে যাবেন না বা এই প্রার্থনা ত্যাগ করবেন না। ইমাম (আ.) এর আবির্ভাবের জন্য প্রতিদিন দোয়া করার অভ্যাস করবো, আর এই অভ্যাসটি আমরা প্রতিদিনের পাচ ওয়াক্ত নামাযের কুনুতে করতে পারি। আমরা এই কুনুতে আল্লাহুম্মা কুল্লি ওয়ালিয়িকাল, আল্লাহুম্মা আজ্জিল লি ওয়ালিয়িকাল ফারাজ পড়তে পারি এবং দুরুদ এর সাথে আজ্জিল ফারাজাহুম পড়ে ইমাম(আ.) এর জন্য দোয়া করতে পারি।
আমরা যদি চাই এই বৈশিষ্ট্য যা মহান রব্বিল আলামিন এই দোয়া পড়ার জন্য দিয়েছে তা হাতছাড়া না হোক অবস্যই ইমাম (আ.) এর আবির্ভাবের দোয়াকে পরিত্যাগ করা যাবে না। ইমাম জামানা (আ.) কয়েকটি সাক্ষাতে সে ব্যাক্তিদের ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন যারা ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করে না। ইমামে জামানা (আ.) মসজিদে জামকারানের উঠানে হজ আলী মুহাম্মাদ ফাশান্দির সাথে সাক্ষাতের সময় এক গ্লাস পানি পান করেন তারপর তাকে বলেন আমাদের শিয়ারা পানি পান করার সমপরিমাণও আমাদেরকে চাই না যদি চাইতো দোয়ার মাধ্যমে আমার আবির্ভাবকে পৌছাতো অর্থ্যাৎ আবির্ভাব হয়ে যেতো। ( শিগুফতানে হযরত মাহদী খন্ড-১, পৃ:-১৫৫)
প্রশ্ন- আমরা কিভাবে জানবো ইমাম জামানা(আ.) এর আমাদের প্রতি কোন অভিযোগ আছে কিনা?
উত্তর :- যদি আমরা ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করি এবং নিজেকে গুনাহ থেকে বাচিয়ে রাখি, ওয়াজিবকে পালন করি। আমাদের দায়িত্বের উপর আমল করি, তাহলে অবস্যই ইমাম (আ.) আমাদের থেকে রাজি আছেন। আর যদি এর উল্টোটা হয়, তাহলে ইমাম(আ.) এর আমাদের প্রতি অভিযোগ রয়েছে। যদি আমরা চাই ইমাম(আ.) আমাদের জন্য দোয়া করুক, তাহলে আমাদেরও উচিত ইমাম (আ.) এর জন্য দোয়া করা। আর ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করা মানেই হল ইমাম(আ.) এর জন্য দোয়া করা। আমাদের দেনন্দিন জীবনে আমরা কত সমস্যার সম্মুখীন হই, আর তার জন্য আমরা কত ধরনের আমল আর দোয়া খুজি। সকল সমস্যা সমাধান এর একটি সহজ উপাই হল ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করা।
ইমামে জামানা (আ.) ইসহাক বিন ইয়াকুবের কাছে পাঠানো বার্তায় আবির্ভাবের দোয়া করার জন্য জোর দিয়েছেন:
আমার দ্রুত আবির্ভাবের জন্য বেশি বেশি প্রার্থনা করুন, কারণ আমার আবির্ভাবই আপনাদের দু:খ কষ্ট দূর করবে।
অতএব ইমাম(আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া অর্থাৎ মানব জাতির ও মাজলুমগণের নাজাত এর জন্য দোয়া করা। তাই আমাদের উচিত বেশি করে ইমাম (আ.) এর আবির্ভাবের জন্য দোয়া করা।
ইমাম সাজ্জাদ(আ.) জনকল্যাণ সংস্থা চট্রগ্রাম