গিবতের সংজ্ঞায় মহানবী (সা.) যা বলেছেন

গিবতের সংজ্ঞায় মহানবী (সা.) যা বলেছেন
গিবতের সংজ্ঞায় মহানবী (সা.) যা বলেছেন

মানুষের দোষ-ত্রুটি নিয়ে সাধারণ আলাপ-আলোচনা ইসলাম নিষিদ্ধ করেছে। অন্যের দোষচর্চার নাম গিবত। গিবত একটি ভয়াবহ পাপ। এই পাপটি নীরব ঘাতকের মতো; এটি একটি পরিবার, প্রতিষ্ঠান ও সমাজ ধ্বংস করে দিতে পারে।

গিবত আরবি শব্দ। এর অর্থ পরনিন্দা করা, দোষচর্চা করা, কুৎসা রটনা, পেছনে সমালোচনা করা, দোষারোপ করা, কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষগুলো অন্যের সামনে তুলে ধরা। (মুজামু মাকাঈসিল লুগাহ, ৪/৪০৩)
গিবতের পরিচয় সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তোমরা কি জানো গিবত কী? সাহাবিরা বলেন, এ ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সর্বাধিক অবগত। তখন নবী (সা.) বলেন, (গিবত হচ্ছে) তোমার ভাইয়ের ব্যাপারে এমন কিছু বলা, যা সে অপছন্দ করে।

জিজ্ঞেস করা হলো, ‘আমি যা বলছি, তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে আপনার অভিমত কী?’ তিনি বলেন, তুমি তার (দোষ-ত্রুটি) সম্পর্কে যা বলছ, সেটা যদি তার মধ্যে থাকে, তাহলে তুমি তার গিবত করলে। আর যদি সেই (ত্রুটি) তার মধ্যে না থাকে, তাহলে তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৭৪; তিরমিজি, হাদিস : ১৯৩৪)
গিবতের সংজ্ঞায় ইমাম নববী (রহ.) বলেন, গিবত হচ্ছে মানুষের মধ্যে বিদ্যমান দোষ-ত্রুটি নিয়ে আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। চাই সেই দোষ-ত্রুটির সম্পর্ক তার দেহ-সৌষ্ঠব, দ্বিনদারিতা, দুনিয়া, মানসিকতা, আকৃতি, চরিত্র, ধনসম্পদ, সন্তান-সন্ততি, পিতামাতা, স্ত্রী, চাকর-বাকর, পাগড়ি, পোশাক, চলাফেরা, ওঠা-বসা, আনন্দ-ফুর্তি, চরিত্রহীনতা, রূঢ়তা, প্রফুল্লতা-স্বেচ্ছাচারিতা বা অন্য যেকোনো কিছুর সঙ্গে হোক না কেন।

এসবের আলোচনা মুখে বলে, লিখে, আকার-ইঙ্গিতে, চোখের ইশারায়, হাত দিয়ে, মাথা দুলিয়ে বা অন্য যেকোনো উপায়েই করুন না কেন, তা গিবত। (আল-আজকার, পৃষ্ঠা ৩৩৬)