বাংলা ভাষা সংক্রান্ত; ৩য় পর্ব

বাংলা ভাষা সংক্রান্ত; ৩য় পর্ব
বাংলা ভাষা সংক্রান্ত; ৩য় পর্ব

পুঁথির বাংলা ( আরবী – ফারসী শব্দের প্রাচুর্য্যপূর্ণ বাংলা) যে তখনকার বঙ্গদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে বোধগম্য ছিল এবং সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রবর্তিত সংস্কৃত শব্দ বাহুল্যের বাংলা যে এ দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে বোধগম্য ছিল না তার প্রমাণ হচ্ছে ঐ সময়ের পুঁথি কবি বা শায়ের মোহাম্মদ দানেশের নিম্নোক্ত কবিতা যাতে তিনি কিসসা -ই চাহার দরবেশ ( চার দরবেশের কেচ্ছা ) রচনার কারণ উল্লেখ করেছেন । আর কবিতাটি :

পুঁথির বাংলা ( আরবী – ফারসী শব্দের প্রাচুর্য্যপূর্ণ বাংলা) যে তখনকার বঙ্গদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে বোধগম্য ছিল এবং সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রবর্তিত সংস্কৃত শব্দ বাহুল্যের বাংলা যে এ দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে বোধগম্য ছিল না তার প্রমাণ হচ্ছে ঐ সময়ের পুঁথি কবি বা শায়ের মোহাম্মদ দানেশের নিম্নোক্ত কবিতা যাতে তিনি কিসসা -ই চাহার দরবেশ ( চার দরবেশের কেচ্ছা ) রচনার কারণ উল্লেখ করেছেন । আর কবিতাটি :
কেতাব করিল মর্দ ফারসি জবানে
ফারসি লোক যারা তারা খুসি হালে শুনে ।।
বাঙ্গালার লোক সবে নাহি জানে ভেদ
যে কেহ শুনিল তাহা দেলে করে খেদ
এ খাতেরে ফকিরে হইল সওক
আফসোস না করে যেন বাঙালার লোক
চলিত বাঙ্গালায় কেচ্ছা করিনু তৈয়ার
সকলে বুঝিবে ভাই কারণে ইহার
আসল বাঙ্গালা সবে বুঝিতে না পারে
এ খাতেরে না লিখিলাম শোন বেরাদরে
( দ্র: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, কবিওয়ালা ও শায়ের, পৃ : ৩৫৮ )
শেষের চার লাইনে রয়েছে আমাদের বক্তব্যের প্রমাণ :
কবি বলছেন :
তিনি চলিত বাংলা ভাষায় অর্থাৎ পুঁথির বাংলায় – যা ছিল আরবী – ফারসী শব্দের প্রাচুর্য্যপূর্ণ বাংলা তা – চার দরবেশের কেচ্ছা লিখেছেন এ কারণে যে এই ভাষা (চলিত বাংলা) ছিল সবার বোধগম্য এবং সকলেই তা বুঝত ।
যেহেতু সবাই ( বঙ্গদেশের আপামর জনগণ ) আসল ( খাঁটি) বাংলা ( ইংরেজ প্রবর্তিত সংস্কৃতঘেঁষা ও সংস্কৃত শব্দ বাহুল্যের বাংলা ) বুঝতে পারে না সেহেতু তিনি ঐ আসল বাংলায় চার দরবেশের কেচ্ছা রচনা করেন নি।
চলবে …
মুহাম্মাদ আবদুর রহমান