শয়তান কে?

শয়তান কে?
শয়তান কে?

শয়তান” একটি সাধারণ নাম এবং এটি যেকোন দুষ্টু ও বিপথগামী সত্ত্বাকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়, মানুষ হোক বা অ-মানুষ, তবে “ইবলিস” প্রসিদ্ধ একটি নাম এবং সাধারণভাবে, এটি শয়তানের নাম যে আদমকে (আ.) জান্নাতে প্রতারিত করেছিল এবং এই কারণে তাকে জান্নাত থেকে বহিস্কার করা হয়।
“শয়তান” «شيطان» শব্দটি “শাতান” «شطن» শব্দ থেকে নেওয়া হয়েছে এবং “শয়তান” এর অর্থ ” দুরাত্মা ও অপবত্রি ও হীন”। শয়তানকে একটি বিদ্রোহী এবং অবাধ্য সত্তা বলা হয় – সে মানুষ, বা জিন বা অন্যান্য জীবই হোক না কেন – এবং এটি একটি মন্দ আত্মা এবং সত্য থেকে অনেক দূরেও বোঝানো হয়েছে। এই শব্দটি একটি সাধারণ নাম, তবে “ইবলিস” হচ্ছে নির্দিষ্ট নাম। অন্য কথায়, তারা যেকোন দুষ্টু, পথভ্রষ্ট, অত্যাচারী এবং বিদ্রোহী সত্তাকে “শয়তান” বলে – মানুষ হোক বা অমানুষ – আর ইবলিস সেই শয়তানের নাম যে আদমকে ধোঁকা দিয়ে তাকে জান্নাত থেকে বের করে দিয়েছিল।
পবিত্র কুরআনে এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। শয়তান একটি দুষ্টু ও ক্ষতিকর সত্তা, যে সৎপথ থেকে দূরে থাকে এবং অন্যের ক্ষতি করার চেষ্টা করে, এমন একটি সত্তা যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করে এবং বিরোধ এবং দুর্নীতি শুরু হয়, যেমনটি আমরা কুরআনে পড়ি:

«إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَنْ يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاءَ فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَنْ ذِكْرِ اللَّهِ وَعَنِ الصَّلَاةِ ۖ فَهَلْ أَنْتُمْ مُنْتَهُونَ»

শয়তানের একমাত্র কামনা এই যে, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষ ও শত্রুতা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদের বিরত রাখে, তবে কি তোমরা (তা থেকে) বিরত হবে? (সূরা মায়েদাহ, আয়াত: ৯১)
কুরআনে শয়তানকে কোন নির্দিষ্ট সত্তা হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি, এমনকি মন্দ ও দুর্নীতিবাজদেরও বলা হয়েছে, যেমনটি কুরআনে বলা হয়েছে:

«وَ كَذلِكَ جَعَلْنا لِكُلِّ نَبِيٍّ عَدُوًّا شَياطِينَ الْإِنْسِ وَ الْجِنِّ»

এবং এরূপে আমরা শয়তান (দুরাত্মা) মানুষ ও জিনদের প্রত্যেক নবীর শত্রু করে দিয়েছি, (সূরা আন’য়াম, আয়াত: ১১২)
ইবলিসকে যে শয়তান বলা হয় তার কারণ তার মধ্যে বিদ্যমান দুর্নীতি ও কুফল।
এগুলি ছাড়াও, কখনও কখনও “জীবাণু” এর ক্ষেত্রে “শয়তান” শব্দটি প্রয়োগ করা হয়। যেমন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) একটি হাদিসে বলেছেন: “তোমাদের গোঁফের চুল লম্বা রাখবে না, কারণ শয়তান এটিকে তার জীবনের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করে এবং সেখানে লুকিয়ে থাকে।”
এভাবে একথা স্পষ্ট হয়ে গেল যে, শয়তানের বিভিন্ন অর্থ রয়েছে, যার একটি সুস্পষ্ট উদাহরণ হল “ইবলিস” ও তার বাহিনী এবং অন্য উদাহরণ হল মানুষকে কলুষিত ও বিপথগামী করা এবং কখনও কখনও কিছু ক্ষেত্রে এর অর্থ “ক্ষতিকারক জীবাণু” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাফসীরে নমুনা, ১ম খণ্ড, পৃ: ১৯১