মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এবং ইসলামী ঐক্য

মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এবং ইসলামী ঐক্য
মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এবং ইসলামী ঐক্য

ইসলামী ঐক্যের বিষয় এবং তা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ বিষয়টি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর সিরাত সম্পর্কে গবেষণা করতে গেলে প্রতিটি চিন্তাবিদ প্রথমেই তা উপলব্ধি করতে পারবেন।

«قل هذه سبیلی أدعوا إلی الله علی بصیرهٔ أنا و من اتبعنی »

*** ইসলামী ঐক্যের বিষয়টি উত্থাপন করার গুরুত্ব
ইসলামের ইতিহাস এবং মহানবীর সিরাত এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা সকল মুসলমান চিন্তাবিদদের দৃষ্টি কাড়ে। বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণ বিশেষ করে ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে জানা, বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাসূল(সা.)-এর কি ধরণের পদক্ষেপ নিয়েছেন তা নিয়েও ইসলামী চিন্তাবিদরা গবেষণা করেছেন। ইসলামী ঐক্য এবং তা বিস্তারে রাসূল(সা.)-এর ভূমিকা খুবই উল্লেখ যোগ্য। এই বিষয়টিকে তিনটি আঙ্গিকে উপস্থাপন করা যেতে পারে:
ক) সিরাত পরিচিতির গুরুত্ব
ইসলামী ঐক্য এবং তা বিস্তারে রাসূল(সা.)-এর ভূমিকা এত বেশী যে, প্রতিটি গবেষক রাসূল(সা.)-এর সিরাত অধ্যয়নকালে তার সাথে পরিচিত হতে পারবেন।
নি:সন্দেহে এক্ষেত্রে রাসূল(সা.)-এর পদক্ষেপ মুসলমানদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। কেননা তিনি আল্লাহর মনোনীত নবী ও রাসূল(সা.) যার সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলছেন:

«لقد كان لكم فی رسول الله اسوهٔ حسنهٔ لمن كان یرجو الله والیوم الآخر وذكرالله كثیرا»

(সূরা আহযাব আয়াত ২১ )

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ।
উসওয়া অর্থাৎ নেতা, পথপ্রদর্শক এবং আদর্শ। তা’সী অর্থাৎ কাইকে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা। সুতরাং আলোচ্য আয়াতের ভাষ্য অনুযায়ী রাসূল(সা.)-এর প্রতিটি কর্ম এবং সিদ্ধান্ত সকল মুসলমানের জন্য মানদণ্ড এবং অকাট্য দলিল। মুসলমানদেরকেও রাসূল(সা.)-এর জীবনী নিয়ে চিন্তা করা ও ভেবে দেখা একান্ত জরুরী।
আল্লামা তাবাতাবায়ী লিখেছেন: উসওয়া শব্দের অর্থ অনুসরণ ও অনুকরণ। রাসূল(সা.)-আমাদের আদর্শ অর্থাৎ তার অনুসরণ ও অনুকরণ আমাদের জন্য অবধারিত ও অপরিহার্য। যেহেতু পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে: لقد كان لكم فی رسول الله اسوهٔ حسنهٔ অর্থাৎ তোমরা সর্বদা এবং অনবরত রাসূল(সা.)-এর অনুসরণ কর। পবিত্র কোরআনের আহ্বান হচ্ছে তোমরা রাসূলের অনুসরণ কর অর্থাৎ তার কথার এবং কাজের উভয়েরই অনুসরণ কর।
সুতরাং ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য রাসূল(সা.)-এর সিরাত সম্পর্কে জানা অতীব জরুরী একটি বিষয়।
খ) রাজনৈতিক সিরাত বর্ণনা করা
সমাজের রাজনৈতিক বিষয়ে রাসূল(সা.)-এর ভূমিকা এবং সেগুলোর বিশ্লেষণ ও তার দর্শন ও হেকমত সম্পর্কে আলোচনা এসবই তার রাজনৈতিক সিরাতকে বর্ণনা করে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে নবীর পদক্ষেপ, পথ-নির্দেশনা এবং ইসলামী সমাজের নেতৃত্ব রাসূল(সা.)-এর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের অন্তর্ভুক্ত। এবং ইসলামী ঐক্যের বিষয়টিও যেহেতু রাজনৈতিক ব্যাপার তাই এসম্পর্কে আলোচনা পর্যালোচনা এবং বিশ্লেষণ রাসূল(সা.)-এর রাজনৈতিক সিরাত বর্ণনা করার উত্তম পন্থা।মুসলিম উম্মাহর গঠনের জন্য ইসলামী ঐক্যের ভূমিকা এবং মুসলমানদের জন্য তার সুফল এই বিষয়টির রাজনৈতিক দিকেরই প্রমাণ বহন করে। নি:সন্দেহে এই পথে রাসূল(সা.)-এর ভূমিকার দিকে দৃষ্টিপাত আমাদেরকে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে সহায়তা করবে। অনুরূপভাবে এটা আমাদের জন্য রাসূল(সা.)-এর আদর্শ গ্রহণ করার পথে এবং তার অনুসরণ ও আনুগত্যের পথে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

«من یطع الرسول فقد اطاع الله ومن تولی فما ارسلناك علیهم حفیظا»

(সূরা নিসা আয়াত ৮০)

যারা রাসূলের আনুগত্য করবে তারা আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যারা বিমুখতা অবলম্বন করল, আমি আপনাকে তাদের জন্য রক্ষণাবেক্ষণকারী হিসাবে নিযুক্ত করে পাঠাই নি।
গ) ঐক্যের সিরাত সম্পর্কে জানা
একই উম্মত গঠনের ক্ষেত্রে রাসূল(সা.)-এর সিরাতের অনুসরণ বর্তমান ইসলামী বিশ্বের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে আমাদের জন্য মানদণ্ড ও মাপকাঠি। এভাবে ইসলামী ঐক্যর বিষয়টি শুধুমাত্র রাসূল(সা.)-এর সকল সিরাত বা রাজনৈতিক সিরাতই নয় বরং একটি বিষয় যার সাথে মুসলমানরা জড়িত তার প্রতি মনোযোগী হতে হবে। এভাবে আমাদের পক্ষে ইসলামের ইতিহাস ও রাসূল(সা.)-এর আদর্শ থেকে বর্তমানের জন্য প্রয়োজনীয় সকল নির্দেশাবলী হস্তগত করা সম্ভবপর হবে।

«یا ایها النبی انا ارسلناك شاهدا ومبشرا ونذیرا»

১। ইসলামী উম্মাহর ঐক্য
একটি ঐক্যবধ্য উম্মত সৃষ্টি করার জন্য রাসূল(সা.)-এর সিরাতকে বিভিন্ন দিক থেকে পর্যালোচনা করা সম্ভব। এই বিষয়টিকে জানতে পারলে
ইসলামী উম্মাহর ঐক্য অর্থাৎ সমগ্র ইসলামী উম্মতে ইসলামী ঐক্য এবং আরও ব্যাপকভাবে সমগ্র বিশ্বে ইসলামী ঐক্য এমনভাবে যে, শেষ পর্যন্ত সকল কিছু একটি মাত্র ইসলামী উম্মতে পরিণত হবে।

«وان هذه امتكم امهٔ واحدهٔ وانا ربكم فاتقون » (مؤمنون: ۵۲)

তোমাদের এই উম্মত সব তো একই ধর্মের অনুসারী এবং আমি তোমাদের পালনকর্তা অতএব আমাকে ভয় কর।
এই বিষয়বস্তুর দিকে গভীরভাবে দৃষ্টিপাত করলে স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, ইসলামী উম্মাহর ঐক্যকে অন্য ভাবেও ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করা সম্ভব:
প্রথমত: একটি উম্মত সৃষ্টি, একটি মাত্র উপযুক্ত ইসলামী উদ্দেশ্য; অর্থাৎ একটি মাত্র ইসলামী উম্মত।
দ্বিতীয়ত: ইসলামী উম্মাহর ঐক্য বিষয়বস্তু থেকে আরও কিছু বিষয়বস্তু বের করা সম্ভব তা হল: ইসলামী ঐক্য। যেমন একটি উম্মত বলেতে আমরা একটি বিশ্বজনীন উম্মতকে (বিশ্বজনীন ঐশী হুকুমতকে)বুঝি। আর এটা ইসলামী ঐক্য বৈ আর কিছুই নয়।
সুতরাং রাসূল(সা.)-এর সিরাতকে বিশ্লেষণ করার জন্য তিনটি মূল ভিত্তিকে পৃথক করার গুরুত্ব আমাদের সামনে স্পষ্ট হয়ে যায় যথা: ইসলামী সমাজ, একটি মাত্র ইসলামী উম্মত এবং ইসলামী ঐক্য।
এসম্পর্কে আমরা দীর্ঘ আলোচনা না করে শুধুমাত্র বাক্যগুলোর দিকে ইশারা করেই ক্ষান্ত থাকব।
২। ইসলামী সমাজ
যেখানে মুসলমানরা একটি ভূখণ্ডে একটি উদ্দেশ্য নিয়ে একই রাষ্ট্রে বসবাস করে তাকে ইসলামী সমাজ বলা হয়। প্রকৃতপক্ষে ইসলামী সমাজকে ঐশী হুকুমত প্রতিষ্ঠাও বলা হয়ে থাকে। যেমনটি হযরত ইব্রাহীম(আ.) বলেছেন:

«… و من ذریتنا امهٔ مسلمهٔ لك ..» (بقره: ۱۲۸)

(হে আল্লাহ) এবং আমাদের বংশধর থেকও একটি অনুগত উম্মত সৃষ্টি কর।
যখন কোন হুকুমতের কথা বলা তখন আমরা একটি কাঠামো কিছু লোকের সমষ্টি এবং একটি বিশেষ সম্পর্ককে বুঝে থাকি যা ঐক্য প্রতিষ্ঠা, উদ্দেশ্য ও নির্দিষ্ট পথকে অতিক্রম করে। এভাবে সমাজের ভাবার্থ হচ্ছে একটি সুবিন্যস্ত কাঠামো যা ব্যক্তির বিপরীত। সুতরাং সমাজ বলতে শুধুমাত্র কিছু ব্যক্তির সমষ্টিকেই বুঝায় না। অনেকেই সমাজ শব্দটিকে তার প্রচলিত অর্থে ব্যাবহার করে থাকে এবং বলে: এদের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা একত্রে থাকে। অনেকে আবার বলে: সমাজ বলতে সমষ্টিকে অর্থাৎ একত্রে বসবাস করাকে বুঝিয়েছেন।
সুতরাং প্রতিটি সমাজেরই একটি বিশেষ কাঠামো রয়েছে যার উপর ভিত্তি করে ঐ সমাজ গঠিত হয়। এধরণের একটি কথা আমরা দ্বীনদারী এবং আধুনিকতার সমালোচনায় লেখা বইটিতে দেখতে পাই। সমাজ বলতে শুধু মানুষের সমাজবদ্ধ জীবন-যাপনকেই বুঝায় না বরং সমাজের সাথে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে:

১। সমাজের একটি সামাজিক কাঠামো রয়েছে(Social Order),

২। সামাজিক শৃঙ্খলা থেকেই সমাজবদ্ধ সামাজিক কার্যক্রম সংঘটিত হয়।

এরপরও যে জিনিসটি মানুষের সাথে মানুষের আচরণকে অন্যসকল সৃষ্টির সাথে আচরণ থেকে পৃথক করে তা হচ্ছে মানুষের ভালবাসা ও মানবতা:

«یا ایها الناس انا خلقناكم من ذكر وانثی وجعلناكم شعوبا وقبائل لتعارفوا ان اكرمكم عندالله اتقاكم ان الله علیم خبیر.»

এভাবে মানসিক চাহিদা ও আকর্ষণ মানুষের মধ্যে সামাজিক গুণাবলী সৃষ্টি করে এবং এটাই সামাজিক কর্ম-কাণ্ডের উৎস। এটাকে সামাজিক অবকাঠামোও বলা হয়ে থাকে। অতএব বলা যেতে পারে যে, সামাজিক শৃঙ্খলাই সামাজিক কর্ম-কাণ্ডের উৎস। অর্থাৎ নেযাম বা হুকুমত এবং সামাজিক কর্তৃত্ব একই রকম অর্থ দান করে। এবং এর সাথে এলাহি বা ঐশী শব্দটি ইসলামী সমাজের মর্যাদাকেই প্রমাণ করে। যদিও ইসলামের দৃষ্টিতে সামাজিক ভালবাসা এবং মানবতা খুবই দীর্ঘ একটি আলোচ্য বিষয়, তবে সংক্ষেপে বলা যেতে পারে: পবিত্র কোরআনের দৃষ্টিতে মহব্বত বা ভালবাসা মানুষকে পার্থক্য করার একটি মানদণ্ড। মহব্বত ও ভালবাসা তার চূড়ান্ত পর্যায়ে কেবলমাত্র আল্লাহর জন্যই প্রযোজ্য; কেননা মানুষের গন্তব্য হচ্ছে আল্লাহ: «انا لله وانا الیه راجعون » আর একারণেই পবিত্র কোরআনে আরও বলা হয়েছে: «الا بذكر الله تطمئن القلوب » । অতএব মহব্বত হচ্ছে আল্লাহর নৈকট্যের দিকে যাত্রার প্রথম ধাপ। অনুরূপভাবে মহব্বত ও ভালবাসার কারণেই সামাজিক অবকাঠামো তৈরি হয়েছে:

«ومن آیاته ان خلق لكم من انفسكم ازواجا لتسكنوا الیها وجعل بینكم مودهٔ ورحمهٔ »

এই পবিত্র আয়াতের ঘোষণা অনুযায়ী পরিবার ও সমাজ মহব্বত ও ভালবাসার উপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত।
এই কথাটি মহানবী হযরত মুহাম্মাদ(সা.)-এর পবিত্র হাদিসেও স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে:

«مثل المؤمنین فی توادهم و تراحمهم و تعاطفهم كمثل جسد واحد.»

নাহজুল বালাগাতেও বর্ণিত হয়েছে:

«ایها الناس، انما یجمع الناس الرضا والسخط وانما عقد ناقهٔ ثمود رجل واحد فعمهم الله بالعذاب لماعموه بالرضا. فقال سبحانه: فعقدوها فاصبحوا نادمین …»

হে লোক সকল: মানুষের সমষ্টির মানদণ্ড হচ্ছে সন্তুষ্টি ও ক্রোধ। হযরত সালেহ(আ.)-এর উটকে একজন হত্যা করেছিল কিন্তু অন্য সকলেই তার কাজে রাজি ছিল বিধায় আল্লাহ তাদের সবার উপর আযাব নাযিল করেছিলেন। তারা উটটিকে হত্যা করার পর সকলেই অনুতপ্ত হয়েছিল।
ইসলামী সমাজ সম্পর্কে আরেকটি বিষয় বৃদ্ধি করা প্রয়োজন তা হচ্ছে ধর্মিও সমাজ ও ইসলামী সমাজের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
৩। একটি মাত্র ইসলামী উম্মত
উপরে যে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে তাতে একটি মাত্র ইসলাম উম্মতের ভাবার্থও স্পষ্ট হয়ে গেছে। প্রকৃতপক্ষে একটি মাত্র ইসলামী উম্মত বলতে বিশ্বজনীন ইসলামী সমাজকে বোঝানো হয়েছে যার বৈশিষ্ট্য হচ্ছে সারা বিশ্বের মুসলমানের ঐক্য। তখন এটাকে একটি উম্মত বা একটি বিশ্বজনীন হুকুমত বলা যাবে। একটি ঐক্যবদ্ধ ইসলামী উম্মত হচ্ছে সেই উম্মত যার মধ্যে ইসলামরে সকল নিতিমালা বাস্তবায়ন হয়েছে। অর্থাৎ একটি ঐশী উসলামী সমাজ সেখানে সকলেই ইসলামী আদর্শে আদর্শিত হয়ে সুন্দর ও সুস্ত জীবন-যাপন করে:
«ان هذه امتكم امهٔ واحدهٔ وانا ربكم فاعبدون.» (انبیاء: ۹۲)
তারা সকলেই তোমাদের ধর্মের,একই ধর্মেতো বিশ্বাসী সবাই এবং আমিই তোমাদের পালনকর্তা অতএব আমার উপাসনা ও বন্দেগী কর।
যেভাবে বর্ণিত হয়েছে এই আয়তটি স্পষ্টভাবে বলছে «امهٔ واحده » অর্থাৎ ইসলামী সমাজে ঐক্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে, একটি মাত্র ইসলামী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। এই মহান উদ্দেশ্য মানুষ সৃষ্টির মধ্যেও লুকাইত রয়েছে:
«ولو شاء ربك لجعل الناس امهٔ واحدهٔ ولا یزالون مختلفین الا من رحم ربك ولذلك خلقهم »
ব্যাখ্যা হল: যালিকা বলতে একটি মাত্র উম্মতকে বোঝানো হয়েছে।অর্থাৎ সকলেই একটি উম্মত বা জাতির অনুসরণ করবে এবং আল্লাহ মানুষকে এই মহান উদ্দেশ্য নিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
হযরত ইমাম খোমিনী(রহ.) বলেছেন:ইসলাম সারা বিশ্বের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য এসেছে এবং উম্মতে ইসলামী নামে একটি বিশাল জাতি দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠা করতে এসেছে।
একটি মাত্র জাতি সম্পর্কে মাওলানার জালালুদ্দিন রুমির কবিতায়ও বর্ণিত হয়েছে। তিনি মুমিনদের নফসকে একই মনে করেন:
মোনিনিন অনেক কিন্তু ঈমান একটিই। শরীর অনেক কিন্তু জীবন বা আত্মা একটিই।যদি ঘর গুলোর কোন নিয়ম না থাকত তাহলে মোমিনগণ হত একই।যদি তাদেরকে একত্রে দেখ তাহলে দুই জন একই। ৬লক্ষ পার্থক্য আছে পশুর আত্মায় কিন্তু মানুষের আত্মা হচ্ছে একই আত্মা।