হাদিসে শিয়া শব্দের প্রয়োগ

‘শিয়া’ শব্দটি হাদিসে বিস্তারিতভাবে ব্যবহৃত হয়েছে; তার মধ্য থেকে এখানে আমরা তিনটি উদাহরণ প্রয়োগ করাই যথেষ্ট মনে করছি:

 

১| একদা আলী (আ.) তার এক সহযোগী “নউফ বোকালি” কে বললেন: তোমরা কি জানো আমার শিয়ারা (অনুসারী) কারা (এবং তাদের কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে)?

 

নউফ বলল: আল্লাহর কসম! আমি জানিনা, আপনি বলুন। অতঃপর আলী (আ.) শিয়াদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলতে লাগলেন, উদাহরণ স্বরূপ: আমার শিয়ারা (অনুসারীরা) রাত্রি বেলাতে (একাগ্রতার সাথে) আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকে ও দিনের বেলা তারা সিংহ পুরুষের মতো (ইসলামের রক্ষার্থে) অবস্থান করে।

 

২| আরেকটি হাদিসে শিয়াদেরকে এভাবে পরিচিত করানো হয়েছে:

 

আমাদের শিয়ারা চার চক্ষু বিশিষ্ট! দুটি চক্ষু ও অন্যান্য মানুষের মতই নাকের উপরে এবং অন্য দুটি তাদের অন্তরে (কলবের ভিতর)।

অর্থাৎ তারা অন্য লোকদের মতো বোকা নয় বরং তারা অত্যন্ত চালাক, চতুর, জ্ঞানী, যুদ্ধ বিদ্যা ও কাজে কর্মে পারদর্শী।

 

৩| এক ব্যক্তি ইমাম সাদিক (আ.)-কে বললেন: আলহামদুলিল্লাহ আপনার শিয়ারা অনেক বেশী, ইমাম (আ.) তার দিকে গভীরভাবে তাকিয়ে বললেন: তুমি যাদেরকে আমাদের শিয়া বলছো তারা কি এরূপ করবে? এদের মধ্যে যারা ধনী লোক তারা কি গরিব লোকেদের প্রতি লক্ষ্য রাখে ও তাদেরকে দেখাশোনা করে? তাদের মধ্যে যাদেরকে মহৎ ও বড় মনে করছো তারা কি গুনাহগার ও ভুলকারী ব্যাক্তিদের ক্ষমা করে (নাকি তাদেরকে কয়েকগুণ বেশী শাস্তি দিয়ে থাকে!)? তারা কি তাদের আনন্দ ফুর্তি ও সুখ সমৃদ্ধিতে অন্যদেরকে শরিক করে?

 

সে ব্যক্তি শিয়াদের এতসব বৈশিষ্ট্যের কথা শুনে না বোধক জবাব দিল। অতঃপর ইমাম (আ.) বললেন: (এসব বৈশিষ্ট্য না থাকলে) তাদেরকে শিয়া বলা যাবে না; শিয়া তারাই যারা আমার উল্লেখিত কথামত আমল করে থাকে।

হ্যাঁ, শিয়াদেরকে এরুপই হতে হবে, যুদ্ধের ময়দানে সিংহ পুরুষ, রাত্রিবেলাতে নৈশ এবাদতে মগ্ন, চালাক চতুর,গুনাহগার ও ভুলকারিদের জন্য ক্ষমাশীল ও অভাবীদের জন্য দয়াশীল এবং তাদের আনন্দ ফুর্তিতে অন্যদেরকে শরিক করে থাকে।

 

[সূত্র:- বেলায়েত সম্পর্কিত আয়াতসমূহের তাফসীর পৃ. ৩৫০-৩৫১ —আয়াতুল্লাহ মাকারেম শিরাজি, অনুবাদ- মোহাম্মদ সামিউল হক]