ঈসা (আ.)-এর পাঁচ বৈশিষ্ট্য

ঈসা (আ.)-এর পাঁচ বৈশিষ্ট্য
ঈসা (আ.)-এর পাঁচ বৈশিষ্ট্য

ঈসা (আ.) ছিলেন আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন এবং পৃথিবীর মর্যাদাবান নবী-রাসুলদের একজন। মহান আল্লাহ তাঁকে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য দান করেছিলেন। তা হলো :
১. পিতা ছাড়া জন্মগ্রহণ : কোনো পুরুষের স্পর্শ ছাড়াই মারিয়াম (আ.)-এর গর্ভে ঈসা (আ.)-এর জন্ম হয়। মানব ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর স্মরণ কোরো সেই নারীকে, যে নিজের সতীত্বকে রক্ষা করেছিল, অতঃপর তার মধ্যে আমি আমার রুহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম বিশ্ববাসীর জন্য এক নিদর্শন।’
(সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৯১)
২. মায়ের কোলে কথোপকথন : ঈসা (আ.) জন্মগ্রহণের পরপরই কথা বলেন। তিনি তাঁর মায়ের পবিত্র ও নিজের মর্যাদা প্রকাশ করেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অতঃপর মারিয়াম সন্তানের প্রতি ইঙ্গিত করল।
তারা বলল, যে কোলের শিশু তার সঙ্গে আমরা কিভাবে কথা বলব? সে বলল, আমি আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন, আমাকে নবী করেছেন, যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন, তিনি আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যত দিন জীবিত থাকি, তত দিন নামাজ ও জাকাত আদায় করতে।’
(সুরা : মারিয়াম, আয়াত : ২৯-৩১)
৩. জিবরাইলের সাহায্য লাভ : আল্লাহ তাআলা জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে ঈসা (আ.)-কে শক্তিশালী করেছিলেন এবং তাঁকে বিশেষ নিদর্শন দান করেন। আল্লাহ বলেন, ‘মারিয়ামের পুত্র ঈসাকে স্পষ্ট প্রমাণ দান করেছি ও পবিত্র আত্মা দ্বারা তাকে শক্তিশালী করেছি।
’ (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫৩)
৪. আকাশে উঠিয়ে নেওয়া : একদল অভিশপ্ত ইহুদি সম্প্রদায় ঈসা (আ.)-কে হত্যার ষড়যন্ত্র করলে আল্লাহ তাঁকে আসমানে উঠিয়ে নেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘অথচ তারা তাকে হত্যা করেনি, ক্রুশবিদ্ধও করেনি, কিন্তু তাদের এমন বিভ্রম হয়েছিল। যারা তার সম্পর্কে মতভেদ করেছিল, তারা নিশ্চয়ই এ বিষয়ে সংশয়যুক্ত ছিল; এই সম্পর্কে অনুমানের অনুসরণ ছাড়া তাদের কোনো জ্ঞানই ছিল না। এটা নিশ্চিত যে তারা তাকে হত্যা করেনি। বরং আল্লাহ তাকে তাঁর কাছে তুলে নিয়েছেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।

(সুরা : নিসা, আয়াত : ১৫৭-১৫৮)
৫. দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তন : সাইয়িদুনা ঈসা (আ.) পৃথিবীতে আবারও আগমন করবেন এবং পৃথিবীর সব অনাচার দূর করে ইনসাফ ও সত্যের রাজ্য প্রতিষ্ঠা করবেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘কিতাবিদের মধ্যে প্রত্যেকে নিজেদের মৃত্যুর আগে তাকে বিশ্বাস করবেই এবং কিয়ামতের দিন সে তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে।’
(সুরা : নিসা, আয়াত : ১৫৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, শপথ সেই সত্তার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, শিগগিরই তোমাদের মধ্যে মারিয়ামের পুত্র ঈসা শাসক ও ন্যায় বিচারক হিসেবে আগমন করবেন। তিনি ক্রুশ ভেঙে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন এবং তিনি যুদ্ধের সমাপ্তি টানবেন। তখন সম্পদের ঢেউ বয়ে চলবে। এমনকি কেউ তা গ্রহণ করতে চাইবে না। তখন আল্লাহকে একটি সিজদা করা তামাম দুনিয়া এবং তার মধ্যকার সব সম্পদ থেকে অধিক মূল্যবান বলে গণ্য হবে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৪৮)
আল্লাহ সবাইকে ঈসা (আ.)-এর সঠিক পরিচয় ও মর্যাদা বোঝার তাওফিক দিন। আমিন।