সত্যান্বেষীদের চক্ষু খুলে গেছে, অন্ধরা অন্ধই থেকে যাবে

সত্যান্বেষীদের চক্ষু খুলে গেছে, অন্ধরা অন্ধই থেকে যাবে
সত্যান্বেষীদের চক্ষু খুলে গেছে, অন্ধরা অন্ধই থেকে যাবে

🪴মাদ্রাসায় পড়াশোনা করার সুবাদে মুসলিম উম্মাহর প্রধান দুটি শাখার অন্যতম শিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে জানার সুযোগ হয়েছিল। যদিও শিয়াদের কেন্দ্র ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে যাওয়ার পর সেই জানা তথ্যগুলোর অধিকাংশই মিথ্যা অপবাদ ও ইসলামের শত্রুদের ষড়যন্ত্রমুলক অপপ্রচার (শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব বাঁধিয়ে রাখতে) বলে প্রমাণিত হয়েছে। সেই সব অপবাদ ও মিথ্যা অভিযোগ তুলে ধরা সম্ভব নয়। শুধুমাত্র একটি বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করে আমার মূল আলোচনায় ফিরে যাব।

🪴আমাদের সমাজে বা সারা বিশ্বেই শিয়াদের প্রতি প্রথমত যে অভিযোগ করা হয় তা হচ্ছে- শিয়ারা হযরত আলী ইবনে আবি তালিব (আল্লাহ তাঁর মুখমণ্ডলকে সম্মানিত করুক) কে নবি মনে করে! (নাউযুবিল্লাহ)। এ অভিযোগ তথা অপবাদটি যে শুধুমাত্র আমজনতার তা নয়, বরং আমাদের বিজ্ঞ আলেম সমাজের থেকে উত্থিত হয়েছে।
অথচ, শিয়াদের প্রধান চারটি হাদিস গ্রন্থের অন্যতম উসুলে কাফি তে এসেছে- এক ব্যক্তি হযরত আলী ইবনে আবি তালিব কে জিজ্ঞেস করে-

فَقَالَ لَهُ أَ نَبِيٌّ أَنْتَ فَقَالَ لِأُمِّكَ اَلْهَبَلُ إِنَّمَا أَنَا عَبْدٌ مِنْ عَبِيدِ رَسُولِ اَللَّهِ صَلَّى اَللَّهُ عَلَيْهِ وَ آلِهِ

অর্থাৎ, হে আমিরুল মুমিনিন, আপনি কি নবী? উত্তরে হযরত আলী বলেন, তোমার মা তোমার জন্য কান্না করুক (তুমি ধ্বংস হয়ে যাও), আমি তো রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি) এর দাসদের একজন। (উসুলে কাফি, খ:১, পৃ:৯০)

আমার বুঝে আসে না, এরপরেও কি করে আলেম সমাজ থেকে এহেন ভিত্তিহীন ও গাঁজাখুরি মন্তব্য আসে!

🪴এবার আসি আজকের আলোচনার মূল বিষয়ে। উপরে যে ছবিটি দেখতে পাচ্ছেন তা ২০১৫-১৬ সালের দিকে আমার নজরে পড়েছিল। ছবির সাথে ক্যাপশন ছিল দেখুন ভণ্ড শিয়ারা কিভাবে নামাজে সিজদা করে এই টাইপের। তখনো আমি ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরানে যাইনি বা দেশেও শিয়াদেরকে কাছ থেকে খুব বেশি একটা দেখিনি। কিন্তু যখন ইরানে গেলাম তখন প্রকৃত বিষয়টি জেনে অপবাদ আরোপকারিদের কথা ভেবে আশ্চর্যান্বিত হয়ে গেলাম। কিভাবে তারা এমন অপবাদ রটায়! কাদের পক্ষ হয়ে তারা এগুলো রটে বেড়ায়?

🪴উপরোক্ত ছবিটির সম্পর্কে আমার উদঘাটিত তথ্য হলো, শিয়া সম্প্রদায় ঈদের নামাজের পর দুই গালকে দুই ধাপে মাটিতে রেখে একটি বিশেষ দোয়া পড়ে, এই। মূলত, তারা যেকোন নামাজের সিজদায় মাটির উপর কপাল রাখে যা আমাদের নামাজের সাথে কোনোই পার্থক্য নেই।

🪴শিয়াদের প্রতি এই ঘৃন্য অপবাদ আরোপকারিদের একটি একটি চক্র ইহুদিদের গৃহপালিত মুখোশধারী আলেম, সত্যান্বেষী মুসলিম উম্মাহ এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে গেছে। আর অন্য একটি দল হচ্ছে অজ্ঞ ও অন্ধ, তারা যেখানে যা শোনে কোনো ধরনের বিবেচনা ছাড়াই তা প্রচার করে।

🪴ইরানের ইসলামী বিপ্লবের পর একদল সত্যান্বেষী এইসব ভিত্তিহীন অভিযোগ ও অপবাদের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে শিয়াদের সম্পর্কে ঘাটতে শুরু করে এবং শিয়াদের বিষয়ে ইতিবাচক হতে থাকে। চলতি বছরের ১৩ই এপ্রিল ইসলামের চিরশত্রু ইসরাইলের উপর ইরানের হামলার ঘটনায় যখন মুসলিম বিশ্বে ইরান ও শিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে বেশ ইতিবাচক সাড়া পড়েছে, ঠিক তখনি ইসরাইলের ভাড়া করা মুখোশধারী আলেমরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে এবং পূর্বের ন্যায় এখনো শিয়া বিদ্বেষ ছাড়াচ্ছে।
কিন্তু, এখন সত্যান্বেষীদের চক্ষু খুলে গেছে, যদিও অন্ধরা অন্ধই থেকে যাবে।