ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে অবস্থিত অষ্টম শিয়া ইমাম, ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ইমাম রেজার মূল্যবান বিতর্কগুলোর ওপর গবেষণামূলক একটি সম্মেলন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আলেম, পাদ্রী ও বিশেষজ্ঞরা এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে দেয়া ভাষণে লেবাননের বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম মুহাম্মাদ কুসাইর বলেন, ইমাম রেজা (আ.)-এর সবচেয়ে মূল্যবান গুণ ছিল তার দয়া ও সহানুভুতি। তিনি অপরকে সম্মান জানানো এবং ভদ্রতা বজায় রাখাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন।
তিনি আরো বলেন: ইমাম রেজা (আ.) অন্যান্য ধর্মের পণ্ডিতদের সঙ্গে প্রায়ই ধর্মীয় বিতর্কে অংশগ্রহণ করতেন। এসব বিতর্কের সময় ইমাম উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো মেনে চলতেন। আলোচনা ও বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতেন এই মহান ইমাম।
লেবাননের বিশিষ্ট আলেম মুহাম্মাদ কুসাইর আরো বলেন: খলিফা মামুন ইমাম রেজা (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব ক্ষুণ্ন করা এবং তাকে জ্ঞানগত দিক দিয়ে অপদস্থ করার জন্য অন্যান্য ধর্ম ও মাজহাবের পণ্ডিতদের সঙ্গে ইমামের বিতর্কসভার আয়োজন করতেন। কিন্তু বিতর্ক শেষে খলিফার কাঙ্ক্ষিত ফল বয়ে আসত না বরং প্রতিবারই পণ্ডিতদের পরাজয় হতো এবং ইমামের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও পাণ্ডিত্যের গভীরতা প্রমাণিত হতো।
সম্মেলনের অন্য পর্বে ফিলিস্তিন বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং আন্তর্জাতিক বক্তাগণ ফিলিস্তিনের সর্বসাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
ফিলিস্তিনের বিশিষ্ট খ্রিস্টান চিন্তাবিদ ও পাদ্রী অ্যান্টোনিউস হানানিয়া ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চলমান যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন: ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের সর্বশেষ রক্তবিন্দু ও সর্বশেষ নিঃশ্বাস অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবেন এবং তারা তাদের দেশের ওপর অপরের দখলদারিত্ব মেনে নেবেন না।
তিনি আরো বলেন: আমরা আমাদের নিজেদের দেশে স্বাধীনতা চাই এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণ তাদের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য শুধুমাত্র ইহুদিবাদী ইসরাইল নয় বরং আমেরিকাসহ বিশ্বের সকল আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে শত্রুদের যেকোনো আগ্রাসন রুখে দেবে।
ফিলিস্তিনের জনগণ বিশেষ করে গাজাবাসীর প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্য এই খ্রিস্টান পাদ্রী ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন: আমরা সকল ঐশী ধর্মের অনুসারীরা অভিন্ন লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। যেসব সত্যিকার ইহুদি তাওরাত গ্রন্থ অনুসরণ করছে তারাও ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান পাশবিকতার তীব্র নিন্দা জানায়।
মাশহাদ সম্মেলনে দেয়া ভাষণে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক শায়খ আহমাদ আদ-দামনাহুরি বলেন: ইহুদিবাদীরা কখনোই ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রকৃত ইহুদিরা অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের সম্মান করে। তিনি আরো বলেন: অন্যদিকে নিজেদের ছাড়া অন্য কারো প্রতি ইহুদিবাদীদের বিন্দুমাত্র সম্মান নেই। শুধু ইসলাম নয়, খ্রিস্টানসহ অন্য কোনো ধর্মকে তারা বিন্দুমাত্র মূল্যায়ন করে না; যেটি ইহুদি ধর্মের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।#
সেপ্টে. 20 2024
সকল ঐশী ধর্মের লক্ষ্য এক: ইহুদিবাদ মানে ইহুদি ধর্ম নয়
ইরানের পূর্বাঞ্চলীয় মাশহাদ শহরে অবস্থিত অষ্টম শিয়া ইমাম, ইমাম রেজা (আ.)-এর মাজার প্রাঙ্গণে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয়েছে ইমাম রেজার মূল্যবান বিতর্কগুলোর ওপর গবেষণামূলক একটি সম্মেলন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আলেম, পাদ্রী ও বিশেষজ্ঞরা এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।
সম্মেলনে দেয়া ভাষণে লেবাননের বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ হুজ্জাতুল ইসলাম মুহাম্মাদ কুসাইর বলেন, ইমাম রেজা (আ.)-এর সবচেয়ে মূল্যবান গুণ ছিল তার দয়া ও সহানুভুতি। তিনি অপরকে সম্মান জানানো এবং ভদ্রতা বজায় রাখাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতেন।
তিনি আরো বলেন: ইমাম রেজা (আ.) অন্যান্য ধর্মের পণ্ডিতদের সঙ্গে প্রায়ই ধর্মীয় বিতর্কে অংশগ্রহণ করতেন। এসব বিতর্কের সময় ইমাম উপরোল্লিখিত বিষয়গুলো মেনে চলতেন। আলোচনা ও বিতর্কের সময় প্রতিপক্ষের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করতেন এই মহান ইমাম।
লেবাননের বিশিষ্ট আলেম মুহাম্মাদ কুসাইর আরো বলেন: খলিফা মামুন ইমাম রেজা (আ.)-এর ব্যক্তিত্ব ক্ষুণ্ন করা এবং তাকে জ্ঞানগত দিক দিয়ে অপদস্থ করার জন্য অন্যান্য ধর্ম ও মাজহাবের পণ্ডিতদের সঙ্গে ইমামের বিতর্কসভার আয়োজন করতেন। কিন্তু বিতর্ক শেষে খলিফার কাঙ্ক্ষিত ফল বয়ে আসত না বরং প্রতিবারই পণ্ডিতদের পরাজয় হতো এবং ইমামের জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও পাণ্ডিত্যের গভীরতা প্রমাণিত হতো।
সম্মেলনের অন্য পর্বে ফিলিস্তিন বিষয়ক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় এবং আন্তর্জাতিক বক্তাগণ ফিলিস্তিনের সর্বসাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
ফিলিস্তিনের বিশিষ্ট খ্রিস্টান চিন্তাবিদ ও পাদ্রী অ্যান্টোনিউস হানানিয়া ইহুদিবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের চলমান যুদ্ধের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন: ফিলিস্তিনি জনগণ তাদের সর্বশেষ রক্তবিন্দু ও সর্বশেষ নিঃশ্বাস অবশিষ্ট থাকা পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চালিয়ে যাবেন এবং তারা তাদের দেশের ওপর অপরের দখলদারিত্ব মেনে নেবেন না।
তিনি আরো বলেন: আমরা আমাদের নিজেদের দেশে স্বাধীনতা চাই এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী জনগণ তাদের এই আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য শুধুমাত্র ইহুদিবাদী ইসরাইল নয় বরং আমেরিকাসহ বিশ্বের সকল আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। তারা আত্মবিসর্জনের মাধ্যমে শত্রুদের যেকোনো আগ্রাসন রুখে দেবে।
ফিলিস্তিনের জনগণ বিশেষ করে গাজাবাসীর প্রতি পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার জন্য এই খ্রিস্টান পাদ্রী ইরানের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন: আমরা সকল ঐশী ধর্মের অনুসারীরা অভিন্ন লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি। যেসব সত্যিকার ইহুদি তাওরাত গ্রন্থ অনুসরণ করছে তারাও ইহুদিবাদী ইসরাইলের চলমান পাশবিকতার তীব্র নিন্দা জানায়।
মাশহাদ সম্মেলনে দেয়া ভাষণে মিশরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক শায়খ আহমাদ আদ-দামনাহুরি বলেন: ইহুদিবাদীরা কখনোই ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রকৃত ইহুদিরা অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের সম্মান করে। তিনি আরো বলেন: অন্যদিকে নিজেদের ছাড়া অন্য কারো প্রতি ইহুদিবাদীদের বিন্দুমাত্র সম্মান নেই। শুধু ইসলাম নয়, খ্রিস্টানসহ অন্য কোনো ধর্মকে তারা বিন্দুমাত্র মূল্যায়ন করে না; যেটি ইহুদি ধর্মের সঙ্গে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।#
By bn • একেশ্বরবাদীদের মধ্যে ঐক্য 0