ইরানি আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ‘নাসের রাফিয়ি’ পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সূরা রুমের কয়েকটি আয়াতের তাফসির করতে গিয়ে বলেছেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, কিছু মানুষ আছে যাদেরকে নেয়ামত দান করলে তারা উদ্ধত
অহংকারি হয়ে যায়; আবার তাদের কাছ থেকে নেয়ামত কেড়ে নেয়া হলে তারা আল্লাহকে অস্বীকারকারী কাফিরে পরিণত হয়। পৃথিবীর জীবনে একদিন আমার সম্পদ থাকবে আরেকদিন থাকবে না; কাজেই যেদিন আমাদের সম্পদ থাকবে সেদিন আল্লাহর শোকর আদায় করব না এবং যেদিন সম্পদ থাকবে না সেদিন কুফরি করব- এটা হওয়া উচিত নয়।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি বলেন: বিশ্বজগতে যেমন চড়াই উৎরাই রয়েছে তেমনি এখানে আছে শান্ত অবস্থা ও অস্থিরতা। পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, আল্লাহর নবী হযরত আইয়ুব (আ.), হযরত ইয়াহিয়া (আ.) ও হযরত জাকারিয়া (আ.) ভয়ঙ্কর সব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েও ধৈর্য ধারণ করেছেন।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি তার বক্তব্যের অন্য অংশে পবিত্র কুরআনের আরেকটি আয়াতের তাফসির করতে গিয়ে বলেন: আল্লাহ তায়ালা বিশ্বনবী (সা.)কে উদ্দেশ করে বলেছেন: আপনি মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। মুফাসসেরিনে কেরাম এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এখানে মৃত ব্যক্তি বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা জীবিত কিন্তু তাদের অন্তর মরে গেছে।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি আরো বলেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, যে ঈমানদার ব্যক্তি সৎকর্ম করবে তাকে আমি পবিত্র জীবন দান করব অর্থাৎ তার আত্মা জীবন্ত হয়ে উঠবে। আমিরুর মুমিনিন ইমাম আলী (আ.) বলেন, কিছু মৃত ব্যক্তি সচল। তাদের অবয়ব মানুষের মতো হলেও তাদের অন্তর বন্য পশুর আকৃতি ধারন করেছে। তারা জীবনটা পশুর জীবনে পরিণত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ‘জীবন’ শব্দটি কিয়ামত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিয়ামতের দিন কেউ কেউ অনুশোচনা করে বলবে, হায়! আমরা যদি জীবনের জন্য আগেভাগে কিছু পাঠিয়ে দিতাম।
এই মুফাসসিরে কুরআন আরো বলেন, কারো কারো চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায় না, কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না- এর অর্থ হচ্ছে আপনি তাকে হেদায়েতের যে বাণী শোনান তা সে উপলব্ধি করে না।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি বলেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে হযরত নূহ (আ.) ও হযরত ইব্রাহিম (আ.)সহ সকল রাসূলকে সালাম দিয়েছেন। মহান আল্লাহ মৃত ব্যক্তিকে সালাম দেন না। তিনি যখন সালাম দিয়েছেন এর অর্থ হচ্ছে, নবী-রাসূলগণ বারজাখে জীবিত রয়েছেন। বদর যুদ্ধের পর মহানবী (সা.) নিহত শত্রুসেনাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাদেরকে বলেন যে, তোমরা কি আল্লাহর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখেছ? এ সময় মুসলিম বাহিনীর কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, মৃতদের সঙ্গে কি কথা বলা যায়? হুজুরে পাক (সা.) জবাব দেন, এই মুহূর্তে আমি কী বলছি তা তারা তোমাদের চেয়ে ভালোভাবে উপলব্ধি করছে।
এই দ্বীনি আলেম নাহজুল বালাগা উদ্ধৃত করে বলেন: হযরত আলী (আ.) সিফফিনের যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে কুফার কবরস্থানের সামনে থামেন এবং সেখানে শায়িত মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ করে বলেন: হে একাকীত্ব ও আতঙ্কের অধিবাসীরা! আমি আলী বলছি, আমি তোমাদেরকে তিনটি খবর জানাতে চাই। তোমাদের রেখে যাওয়া ঘরবাড়িতে এখন অন্যরা বসবাস করছে, তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পদ তারা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে এবং তোমাদের স্ত্রী ও স্বামীরা সুখে শান্তিতে জীবন কাটাচ্ছে।
এরপর হযরত আলী নিজ সঙ্গীদের উদ্দেশ করে বলেন: আল্লাহ তায়ালা যদি এই মৃত ব্যক্তিদের কথা বলার অনুমতি দিতেন তাহলে তারা বলত: আমরা যে জগতে আছি সেখানে শুধুমাত্র যে জিনিসটি কাজে আসে তা হচ্ছে, তাকওয়া ও পরহেজগারি।
জুন 2 2024
পবিত্র কুরআনে বর্ণিত সচল মৃত মানুষ কারা?
ইরানি আলেম হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ‘নাসের রাফিয়ি’ পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে সূরা রুমের কয়েকটি আয়াতের তাফসির করতে গিয়ে বলেছেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, কিছু মানুষ আছে যাদেরকে নেয়ামত দান করলে তারা উদ্ধত
অহংকারি হয়ে যায়; আবার তাদের কাছ থেকে নেয়ামত কেড়ে নেয়া হলে তারা আল্লাহকে অস্বীকারকারী কাফিরে পরিণত হয়। পৃথিবীর জীবনে একদিন আমার সম্পদ থাকবে আরেকদিন থাকবে না; কাজেই যেদিন আমাদের সম্পদ থাকবে সেদিন আল্লাহর শোকর আদায় করব না এবং যেদিন সম্পদ থাকবে না সেদিন কুফরি করব- এটা হওয়া উচিত নয়।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি বলেন: বিশ্বজগতে যেমন চড়াই উৎরাই রয়েছে তেমনি এখানে আছে শান্ত অবস্থা ও অস্থিরতা। পবিত্র কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী, আল্লাহর নবী হযরত আইয়ুব (আ.), হযরত ইয়াহিয়া (আ.) ও হযরত জাকারিয়া (আ.) ভয়ঙ্কর সব কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েও ধৈর্য ধারণ করেছেন।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি তার বক্তব্যের অন্য অংশে পবিত্র কুরআনের আরেকটি আয়াতের তাফসির করতে গিয়ে বলেন: আল্লাহ তায়ালা বিশ্বনবী (সা.)কে উদ্দেশ করে বলেছেন: আপনি মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। মুফাসসেরিনে কেরাম এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেছেন, এখানে মৃত ব্যক্তি বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যারা জীবিত কিন্তু তাদের অন্তর মরে গেছে।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি আরো বলেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন, যে ঈমানদার ব্যক্তি সৎকর্ম করবে তাকে আমি পবিত্র জীবন দান করব অর্থাৎ তার আত্মা জীবন্ত হয়ে উঠবে। আমিরুর মুমিনিন ইমাম আলী (আ.) বলেন, কিছু মৃত ব্যক্তি সচল। তাদের অবয়ব মানুষের মতো হলেও তাদের অন্তর বন্য পশুর আকৃতি ধারন করেছে। তারা জীবনটা পশুর জীবনে পরিণত হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ‘জীবন’ শব্দটি কিয়ামত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিয়ামতের দিন কেউ কেউ অনুশোচনা করে বলবে, হায়! আমরা যদি জীবনের জন্য আগেভাগে কিছু পাঠিয়ে দিতাম।
এই মুফাসসিরে কুরআন আরো বলেন, কারো কারো চোখ আছে কিন্তু দেখতে পায় না, কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না- এর অর্থ হচ্ছে আপনি তাকে হেদায়েতের যে বাণী শোনান তা সে উপলব্ধি করে না।
হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রাফিয়ি বলেন: মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে হযরত নূহ (আ.) ও হযরত ইব্রাহিম (আ.)সহ সকল রাসূলকে সালাম দিয়েছেন। মহান আল্লাহ মৃত ব্যক্তিকে সালাম দেন না। তিনি যখন সালাম দিয়েছেন এর অর্থ হচ্ছে, নবী-রাসূলগণ বারজাখে জীবিত রয়েছেন। বদর যুদ্ধের পর মহানবী (সা.) নিহত শত্রুসেনাদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তাদেরকে বলেন যে, তোমরা কি আল্লাহর প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখেছ? এ সময় মুসলিম বাহিনীর কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, মৃতদের সঙ্গে কি কথা বলা যায়? হুজুরে পাক (সা.) জবাব দেন, এই মুহূর্তে আমি কী বলছি তা তারা তোমাদের চেয়ে ভালোভাবে উপলব্ধি করছে।
এই দ্বীনি আলেম নাহজুল বালাগা উদ্ধৃত করে বলেন: হযরত আলী (আ.) সিফফিনের যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে কুফার কবরস্থানের সামনে থামেন এবং সেখানে শায়িত মৃত ব্যক্তিদের উদ্দেশ করে বলেন: হে একাকীত্ব ও আতঙ্কের অধিবাসীরা! আমি আলী বলছি, আমি তোমাদেরকে তিনটি খবর জানাতে চাই। তোমাদের রেখে যাওয়া ঘরবাড়িতে এখন অন্যরা বসবাস করছে, তোমাদের রেখে যাওয়া সম্পদ তারা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিয়েছে এবং তোমাদের স্ত্রী ও স্বামীরা সুখে শান্তিতে জীবন কাটাচ্ছে।
এরপর হযরত আলী নিজ সঙ্গীদের উদ্দেশ করে বলেন: আল্লাহ তায়ালা যদি এই মৃত ব্যক্তিদের কথা বলার অনুমতি দিতেন তাহলে তারা বলত: আমরা যে জগতে আছি সেখানে শুধুমাত্র যে জিনিসটি কাজে আসে তা হচ্ছে, তাকওয়া ও পরহেজগারি।
By bn • মুস্তাবসেরগণের মুনাজিরা 0