এসকল নও মুসলিমদের মধ্যে কেউ কেউ অন্য ধর্মের অনুসরণ করত। আবার কেউ কেউ কোন ধর্মেরই অনুসরণ করত না।
মুসলমান হওয়ার কারণে এসকল নও মুসলিমদের অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের বিরোধিতা এবং পূর্বের অভ্যাস ত্যাগ করা সহ অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
তবে নও মুসলিমদের সবচেয়ে বেশী যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেটি হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষীদের মোকাবিলা করা। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই সমস্যাটি অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা “বাজফীড নিউস” আমেরিকার চার জন নও মুসলিমের সাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ব্যাপারে কথা বলেছে।
১৮ বছরেরে খৃষ্টান মেয়ে “আনিকা হ্যাকফিল্ডা”। ২০১৬ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সূত্র ধরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
তিনি এব্যাপারে বলেন: আমার কর্মস্থলে অনেক মুসলিম কর্মী রয়েছে। আমার সহকর্মীদের নিকট হতে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। এ পর্যায়ে (ইসলাম বিদ্বেষ প্রচারাভিযান বিস্তার ফলে) আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে অধিক পর্যবেক্ষণ করব। পর্যবেক্ষণ করে আমি বুঝতে পারি যে, আমি যে ধর্মের অপেক্ষায় ছিলাম সেটিই এই ধর্ম।
অনিক বলেন: যখন আমার আশেপাশের লোকদের বলি যে, আমি মুসলমান হয়েছি।
অনিকার পরিবার ট্রাম্প ভেরীর ভক্ত এবং তারা আমেরিকায় পাঁচটি মুসলিম দেশের সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে সমর্থন করেছে।
তিনি বলেন: মুসলমানদের সাথে ইসলাম বিদ্বেষীসুলভ ব্যবহার করার জন্য আমার পরিবার আনন্দিত। আমি জানি না, কিভাবে এই বিষয়টির মোকাবেলা আমি করব।
হিজাব ব্যবহার কারাও সমাজে অন্যতম একটি সমস্যা। এ ব্যাপারে অনিকা বলেন: মানুষ মনে করে হিজাবের মাধ্যমে নারীদের পরাধীন করে রাখা হয় এবং তাদের ওপর অত্যাচার করা হয়। তাদের ধারণ ইসলাম ধর্মে এর মাধ্যমে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মূল্যায়ন কম। এ কারণে কিছু সংখ্যক লোক হিজাবী নারীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে না।
অপর এক নও মুসলিম “ক্রিস সেন্ট লুই”। তিনি ১১ সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনার পর ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে আমি একটা সংকটের মধ্যে ছিলাম। সবসময় চিন্তা করতাম আমি কেন জীবিত। তবে ইসলাম ধর্মের সাথে পরিচিত হওয়ার পর এবং এ সম্পর্কে অধিক জ্ঞান অর্জন করার পর আমি স্বস্তি ফিরে পাই।
ক্রিস বলেন: আমি যখন ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা করলাম তখন বুঝতে পারলাম যে, এই ধর্মের সমল রীতি-নীতি যুক্তি সংগত।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আমি অনুভব করি যে, এটিই আমার জীবনের সর্বোত্তম সময় এবং এ জন্য আমি সর্বদা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিকটবর্তীদের আচরণ সম্পর্কে তিনি বলেন: “আমার মুসলমান হওয়ার বিষয়টি শোনার পর সকল আমাকে বলে: তুমি মুসলমান হয়েছো? উসামা বিন লাদেনের মতো? তবে এই বিষয়টি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়েছে।
আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশের নাগরিক ‘কাসান্ডারা উভয়ারিয়াল’। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে তিনি কোন মুসলমানের সাথেই পরিচিত হননি।
তিনি বলেন: মুসলমান হওয়ার পূর্বে আল্লাহর সাথে আমার কোন সম্পর্কই ছিল না। তার সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই ছিল না। তবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর এবং এই ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার পর আমি নিজেই আশ্চর্য হয়েছি।
আমেরিকান সমাজে হিজাব ব্যবহারের প্রতিকূলতা সম্পর্কে কাসান্ডারা বলেন: ইউটিউব এবং টেলিভিশন চ্যানেল যেমন এ বি সি’তে ইসলাম বিরোধী অনেক কথাই শুনেছি। আমি সকলকে দেখাতে চাই যে, ইসলাম ধর্মের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই।
মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার ওপর তিনি বলেন: এই বিষয়টি আমার জন্য অনেক কঠিন একটি বিষয়। এটি মোটেও যুক্তিসংগত নয়। অন্যান্য আমেরিকানদের মতো মুসলমানেরাও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আমি পূর্বে থেকে অধিক স্বাভাবিক নয়। কারণ বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষীদের কার্যক্রম অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাসান্ডারা বলেন: আমেরিকান সমাজে হিজাব ব্যবহার করা অতি কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। তবে হিজাব ব্যবহারের ফলে আমার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপর এক নও মুসলমান ‘রেমন্ড মার্টিনেজ’। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে তার জীবন অগোছালো ও বিধ্বস্তরত ছিলো। তবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তার জীবন উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।
মার্টিনেজ বর্তমানে একটি ভালো চাকরি করছে এবং কয়েক দিন পূর্বে বিবাহ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরই তার জীবন সুন্দর ও পরিপাটি হয়েছে।
রোমন্ড মার্টিনেজ বলেন: আমি সঠিক একটা পথ খোজার চেষ্টায় ছিলাম এবং আমার পূর্বের অবস্থা থেকে মুক্ত পেতে চাচ্ছিলাম। আমি যখন মুসলমান হয়েছি, তখন আমার বন্ধুরা আমাকে বলতো, তুমি ভ্রান্তি পথ বেছে নিয়েছো। তারা বলতো: এর পর থেকে তুমি অনেক কাজ করতে পারবা না (যেমন: পার্টিতে অংশগ্রহণ করা, মদ্য পান করা…) তবে আমি তাদেরকে বলেছি, আমি যে জন্য সৃষ্টি হয়েছি, ঠিক সেই পথই আমি বেছে নিয়েছি। অনেকে বলতো: ইসলাম ধর্ম আরবদের জন্য, তুমি আমেরিকান নিগ্রো, কিভাবে মুসলমান হবা? অনেকে আবার বলতো, সকল মুসলমানেরা সন্ত্রাসী!
আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার তীব্র সমালোচনা করা তিনি বলেন: এই খবর শোনার পর অমি অনেক বিচলিত হয়েছি। শুধুমাত্র ধর্মের জন্য আমেরিকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা কিভাবে সম্ভব।?
জানু. 22 2024
ট্রাম্পের আমলে আমেরিকার নয়া মুসলিমদের জীবন
আমেরিকায় প্রতি ৫ জন মুসলমানের মধ্যে একজন অন্য ধর্ম থেকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়েছেন।
মুসলমান হওয়ার কারণে এসকল নও মুসলিমদের অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের বিরোধিতা এবং পূর্বের অভ্যাস ত্যাগ করা সহ অন্যান্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
তবে নও মুসলিমদের সবচেয়ে বেশী যে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, সেটি হচ্ছে ইসলাম বিদ্বেষীদের মোকাবিলা করা। বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এই সমস্যাটি অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
সম্প্রতি সংবাদ সংস্থা “বাজফীড নিউস” আমেরিকার চার জন নও মুসলিমের সাথে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের ব্যাপারে কথা বলেছে।
১৮ বছরেরে খৃষ্টান মেয়ে “আনিকা হ্যাকফিল্ডা”। ২০১৬ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সূত্র ধরে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
তিনি এব্যাপারে বলেন: আমার কর্মস্থলে অনেক মুসলিম কর্মী রয়েছে। আমার সহকর্মীদের নিকট হতে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। এ পর্যায়ে (ইসলাম বিদ্বেষ প্রচারাভিযান বিস্তার ফলে) আমি সিদ্ধান্ত নিলাম ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে অধিক পর্যবেক্ষণ করব। পর্যবেক্ষণ করে আমি বুঝতে পারি যে, আমি যে ধর্মের অপেক্ষায় ছিলাম সেটিই এই ধর্ম।
অনিক বলেন: যখন আমার আশেপাশের লোকদের বলি যে, আমি মুসলমান হয়েছি।
অনিকার পরিবার ট্রাম্প ভেরীর ভক্ত এবং তারা আমেরিকায় পাঁচটি মুসলিম দেশের সফরের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকে সমর্থন করেছে।
তিনি বলেন: মুসলমানদের সাথে ইসলাম বিদ্বেষীসুলভ ব্যবহার করার জন্য আমার পরিবার আনন্দিত। আমি জানি না, কিভাবে এই বিষয়টির মোকাবেলা আমি করব।
হিজাব ব্যবহার কারাও সমাজে অন্যতম একটি সমস্যা। এ ব্যাপারে অনিকা বলেন: মানুষ মনে করে হিজাবের মাধ্যমে নারীদের পরাধীন করে রাখা হয় এবং তাদের ওপর অত্যাচার করা হয়। তাদের ধারণ ইসলাম ধর্মে এর মাধ্যমে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মূল্যায়ন কম। এ কারণে কিছু সংখ্যক লোক হিজাবী নারীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে না।
অপর এক নও মুসলিম “ক্রিস সেন্ট লুই”। তিনি ১১ সেপ্টেম্বরের দুর্ঘটনার পর ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে আমি একটা সংকটের মধ্যে ছিলাম। সবসময় চিন্তা করতাম আমি কেন জীবিত। তবে ইসলাম ধর্মের সাথে পরিচিত হওয়ার পর এবং এ সম্পর্কে অধিক জ্ঞান অর্জন করার পর আমি স্বস্তি ফিরে পাই।
ক্রিস বলেন: আমি যখন ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে গবেষণা করলাম তখন বুঝতে পারলাম যে, এই ধর্মের সমল রীতি-নীতি যুক্তি সংগত।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আমি অনুভব করি যে, এটিই আমার জীবনের সর্বোত্তম সময় এবং এ জন্য আমি সর্বদা মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি।
ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর নিকটবর্তীদের আচরণ সম্পর্কে তিনি বলেন: “আমার মুসলমান হওয়ার বিষয়টি শোনার পর সকল আমাকে বলে: তুমি মুসলমান হয়েছো? উসামা বিন লাদেনের মতো? তবে এই বিষয়টি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়েছে।
আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশের নাগরিক ‘কাসান্ডারা উভয়ারিয়াল’। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে তিনি কোন মুসলমানের সাথেই পরিচিত হননি।
তিনি বলেন: মুসলমান হওয়ার পূর্বে আল্লাহর সাথে আমার কোন সম্পর্কই ছিল না। তার সম্পর্কে আমার কোন ধারণাই ছিল না। তবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর এবং এই ধর্ম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করার পর আমি নিজেই আশ্চর্য হয়েছি।
আমেরিকান সমাজে হিজাব ব্যবহারের প্রতিকূলতা সম্পর্কে কাসান্ডারা বলেন: ইউটিউব এবং টেলিভিশন চ্যানেল যেমন এ বি সি’তে ইসলাম বিরোধী অনেক কথাই শুনেছি। আমি সকলকে দেখাতে চাই যে, ইসলাম ধর্মের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই।
মুসলমানদের আমেরিকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার ওপর তিনি বলেন: এই বিষয়টি আমার জন্য অনেক কঠিন একটি বিষয়। এটি মোটেও যুক্তিসংগত নয়। অন্যান্য আমেরিকানদের মতো মুসলমানেরাও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
তিনি বলেন: ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর আমি পূর্বে থেকে অধিক স্বাভাবিক নয়। কারণ বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষীদের কার্যক্রম অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে।
কাসান্ডারা বলেন: আমেরিকান সমাজে হিজাব ব্যবহার করা অতি কষ্টসাধ্য একটি বিষয়। তবে হিজাব ব্যবহারের ফলে আমার গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
অপর এক নও মুসলমান ‘রেমন্ড মার্টিনেজ’। ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পূর্বে তার জীবন অগোছালো ও বিধ্বস্তরত ছিলো। তবে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তার জীবন উন্নতির দিকে ধাবিত হয়।
মার্টিনেজ বর্তমানে একটি ভালো চাকরি করছে এবং কয়েক দিন পূর্বে বিবাহ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পরই তার জীবন সুন্দর ও পরিপাটি হয়েছে।
রোমন্ড মার্টিনেজ বলেন: আমি সঠিক একটা পথ খোজার চেষ্টায় ছিলাম এবং আমার পূর্বের অবস্থা থেকে মুক্ত পেতে চাচ্ছিলাম। আমি যখন মুসলমান হয়েছি, তখন আমার বন্ধুরা আমাকে বলতো, তুমি ভ্রান্তি পথ বেছে নিয়েছো। তারা বলতো: এর পর থেকে তুমি অনেক কাজ করতে পারবা না (যেমন: পার্টিতে অংশগ্রহণ করা, মদ্য পান করা…) তবে আমি তাদেরকে বলেছি, আমি যে জন্য সৃষ্টি হয়েছি, ঠিক সেই পথই আমি বেছে নিয়েছি। অনেকে বলতো: ইসলাম ধর্ম আরবদের জন্য, তুমি আমেরিকান নিগ্রো, কিভাবে মুসলমান হবা? অনেকে আবার বলতো, সকল মুসলমানেরা সন্ত্রাসী!
আমেরিকায় মুসলমানদের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার তীব্র সমালোচনা করা তিনি বলেন: এই খবর শোনার পর অমি অনেক বিচলিত হয়েছি। শুধুমাত্র ধর্মের জন্য আমেরিকায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা কিভাবে সম্ভব।?
By bn • মুস্তাবসেরগণের জীবনী 0 • Tags: আমেরিকা, ইসলাম, জীবন, ট্রাম্প, ধর্ম, মুসলিম, সংবাদ